জেলা শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে গত মঙ্গলবার একাডেমির সেমিনার হলে ‘বাংলা নাটকের ইতিবৃত্ত’ শিরোনামে বাংলা সাহিত্য পরিক্রমা বিষয়ক লেকচার ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্কশপে আলোচক ছিলেন চবি নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. কুন্তল বড়ুয়া। ওয়ার্কশপের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা কালচারাল অফিসার মো. মোসলেম উদ্দিন এবং ওয়র্কশপে বাঙালি সংস্কৃতিতে বাংলা নাটকের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও ঐতিহ্যে বিষয়ে আলোচনা করেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা বিভাগের প্রশিক্ষক জোবায়দুর রশীদ।
ওয়ার্কশপে আলোচক ড. কুন্তল বড়ুয়া বলেন, নাটক, নাট্য, নট, নটী–এ শব্দগুলোর মূল শব্দ হলো নট। নট মানে হলো নড়াচড়া বা অঙ্গচালনা করা। নাটকের মাধ্যমে মূলত অভিনেতা–অভিনেত্রীগণ অঙ্গচালনা, কথাবার্তা ইত্যাদির মাধ্যমে জীবনের বা সমাজের বিশেষ কোন দিক বা ঘটনার উপস্থাপন করেন। বাংলা সাহিত্যে আদি নিদর্শন চর্যাপদ এর চর্চা হতে এটা প্রতীয়মান যে বাংলা নাটকের ইতিহাস হাজার বছরের।
তিনি বলেন, ১৭৯৫ সালের ২৭ নভেম্বর ইংরেজি নাটক ‘দ্যা ডিজগাইজ’ প্রথম বাংলায় রূপান্তর করে কাল্পনিক সংবদল নামে অভিনীত হয়। ১৮৫২ সালে বাঙালির নিজস্ব রচিত নাটক তারাচাঁদ শিকদারের ভদ্রার্জ্জুন মঞ্চায়িত হয়। সর্বপ্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মাইকেল মধুসূধন দত্ত রচিত নাটক ‘শর্মিষ্ঠা’ মঞ্চায়িত হয়। পূর্ববঙ্গের নাট্যচর্চায় স্বাভাবিকভাবেই এ অঞ্চলের সমাজবাস্তবতা–সমাজচিত্র বিশেষভাবে চিত্রায়িত হয়ে উঠেছিল। ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সময়গুলোতেও বাংলা নাটকের ভূমিকা ছিল অপরসীম। ১৯৭১ সালে আব্দুল্লাহ ইউসুফ ইমাম রচিত ‘১৬ মার্চ’ নাটকটি এবং শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস ‘সংশপ্তক’ অবলম্বনে ধারাবাহিক সংশপ্তক মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অনুপ্রাণিত করে তোলে। কর্মশালায় উপস্থিত শিক্ষার্থী ও শিল্পীরা নাট্যকলার ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্যের উপর তত্বীয় ও ব্যবহারিক বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।