সীতাকুণ্ডে সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা মৃত ডলফিনের পঁচা দুর্গন্ধে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। ফলে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন সৈকতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা। গতকাল সোমবার বিকালে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর সমুদ্র সৈকত এলাকায় গিয়ে মৃত ডলফিনটি পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় সপ্তাহখানেক আগে জোয়ারের পানিতে সমুদ্র সৈকতে উঠে আসে মৃত ডলফিনটি। বিষয়টি উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর ও বন বিভাগকে অবহিত করা হলেও মৃত ডলফিনটি মাটিচাপা দিতে এগিয়ে আসেনি কেউ। অন্যদিকে আইনি জটিলতায় আটকা পড়ার ভয়ে মৃত ডলফিনটি মাটিচাপা দেননি স্থানীয়রা। ফলে মৃত ডলফিনটি পচে পুরো সৈকত এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন সৈকতে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীসহ উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা।
গতকাল বিকালে দেখা যায়, সাগর উপকূলীয় বেড়িবাঁধে উঠতেই উৎকট পঁচা গন্ধে নাক চেপে হাঁটতে হচ্ছে। বেড়িবাঁধে বসানো ব্লকের উপর মৃত ডলফিনটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। ডলফিনটি পচে মাংস খসে পড়ছে। ডলফিনটির চারপাশে ভনভন করছে মাছি। ওই এলাকার বাসিন্দা জেলে সজীব মিয়া বলেন, এক সপ্তাহ আগে মৃত ডলফিনটি জোয়ারের পানিতে উপকূলে ভেসে আসে। প্রথমে বেড়িবাঁধের সঙ্গে লাগোয়া ব্লকের বাইরের অংশে ছিল। পরে জোয়ারের ধাক্কায় ডলফিনটি ব্লক পার হয়ে বেড়িবাঁধের নিচের অংশে চলে আসে। এখন জোয়ারের পানি কম থাকায় ডলফিনটি পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
স্থানীয় হামিদুর রহমান জানান, তিনি সহ স্থানীয়রা মৃত ডলফিন ভেসে আসার বিষয়টি উপকূলীয় বন বিভাগকে অবহিত করেন। কিন্তু তারপরও এটি মাটি চাপা না দেওয়ায় পঁচা দুর্গন্ধে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে প্রথমে তারা মৃত ডলফিনটি গত রোববার বিকালে মাটি চাপা দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু আইনি ঝামেলার ভয়ে মাটি চাপা না দিয়ে আবার ফিরে এসেছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, সমুদ্র সৈকতে মৃত ডলফিন পঁচার বিষয়টি তিনি গতকাল সোমবার দুপুরে জানতে পেরেছেন। তবে ট্রেনিং এ থাকার কারণে ঘটনাস্থলে যেতে পারেননি। ডলফিনের বিষয়টি এখন বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ দেখভাল করছে।
সীতাকুণ্ড উপকূলীয় বন বিভাগ কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানান, সৈকতে মৃত ডলফিন পড়ে থাকার বিষয়টি তারা জানতেন না। বিষয়টি তাদের কেউ জানায়নি। গতকাল দুপুরে তিনি বিষয়টি জানতে পেরে বিকালে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে ডলফিনটি পঁচে উৎকট গন্ধের সৃষ্টি হওয়ার কারণে সেটি মাটি চাপা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তা দাহ্য পদার্থ ঢেলে পুড়িয়ে ফেলা হবে।