অপার সম্ভাবনাময় বাঁশখালীর উপকুলীয় সমুদ্র সৈকত। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পাল্টে যাবে এলাকার দৃষ্টপট। দেশের অন্যতম এ দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে সুদীর্ঘ সময় ধরে পর্যটন স্পর্ট বাস্তবায়নের জন্য বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় পূর্ণাঙ্গ পর্যটন স্পর্ট রূপ পেতে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় পর্যটন কর্পোরেশনের প্রতিনিধিসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্তারা এসে ঘুরে গেলেও এখনও পর্যন্ত তা বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগে নেওয়া হয়নি। অপরদিকে এ সমুদ্র সৈকতে গমনের দুটি সড়ক কালীপুরের সলিহা বড়পোল হয়ে বাহারছড়া সৈকতে এবং গুনাগরী কথাসাহিত্যিক আহসাব উদ্দিন সড়ক হয়ে বাহারছড়া ও খানখানাবাদ হয়ে সমুদ্র সৈকতে গমনের সড়ক দুটি টেন্ডার হওয়ার পরেও কাজের ধীরগতির কারণে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি হচ্ছে।
ছুটির দিনে লোকে লোকারণ্য হয়েছে বিনোদন প্রেমিকদের আনা গোনায়। সারি সারি ঝাউবন আর সুদীর্ঘ বেড়িবাঁধের উপর এ সমুদ্র সৈকত যে কারো মন কাড়ে। বালুময় বেলাভূমি এবং ঝাউবনে ঘেরা বাঁশখালী সমুদ্র সৈকত ছনুয়া, গণ্ডামারা, বাহারছড়া, সরল, খানখানাবাদ ও কাথরিয়া উপকূল মিলিয়ে মোট ৩৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। দিগন্ত বিস্তৃত সাগরের বুকে সূর্যাস্তের দৃশ্য, লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ বা দলবেঁধে বিচ ফুটবলে মেতে উঠার আনন্দ ভ্রমণকারীদের দেয় এক অপার্থিব পূর্ণতা ও আনন্দ। নির্জন এই সাগর সৈকতে নিরাপত্তার মোটেও অভাব নেই। এলাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকরা এখানে ফটোগ্রোফার চেয়ার দখলকারী ও হকারদের উৎপাত নেই। যেখানে ইচ্ছে নিজের মত করে ঘুরে বেড়ানো যায়। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরেকটু উন্নত হলে এবং বড় গাড়ি করে এখানে আসার সুযোগ হলে প্রচুর লোক সমাগম হবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
খানখানাবাদ সমুদ্র সৈকত এলাকার সমাজকর্মী জাহেদ আকবর জেবু বলেন, দিন দিন উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত সবার কাছে বিনোদন এবং পর্যটন স্পর্টে রূপ নেওয়াতে এবার ঈদের ছুটিতে প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। এছাড়া নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক চৌধুরী নিজের অর্থায়নে দোলনা এবং রেস্ট নেওয়ার জন্য সৈকত মিতালী নামে একটা ভবন করেছে, যারা চাইলে এখানে এসে বিশ্রাম নিতে পারবেন বলে জানা যায়। খানখানাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, যারা দূরে যেতে চায়না তাদের জন্য এ সমুদ্র সৈকত অন্যতম আকর্ষণীয়। তিনি আরো বলেন, পর্যটনদের আকর্ষণ করতে আমার এলাকায় দোলনা এবং রেস্ট হাউজ করা হয়েছে।
বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজুল ইসলাম বলেন, বাঁশখালীর এ সমুদ্র সৈকতে পর্যটন স্পর্টে রুপ দিতে বাঁশখালীর সংসদ সদস্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া পর্যটক ও ঘুরতে আসা লোকজনের যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় প্রতিনিয়ত সজাগ থাকি। সমুদ্র সৈকতগামী সড়কগুলো সংস্কারে কাজ চলছে এবং টেন্ডার হয়েছে। তার কাজ শেষ হলে জনগণের সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন বলেন, সৈকতে বেড়াতে এসে কেউ যাতে নিরাপত্তার অভাবে না ভোগে তার জন্য বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নজরদারিসহ খোঁজ খবর রাখি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নিরাপদ নিরিবিলি এ সৈকতে যে কারো পছন্দ ও ভাল লাগবে।
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, এক সময় বাঁশখালীর উপকূলে যেতে জনগণ ভয় পেত। সে এলাকাকে বর্তমান সরকারের সহযোগিতায় আধুনিক ও স্থায়ী বেড়িবাঁধ করে দেওয়াতে এখন জনগণ সহজেই বেড়াতে যায়। জনগণের সুবিধার্থে এবং বিনোদনের জন্য দীর্ঘ উপকূলীয় এলাকাকে পর্যটন স্পর্ট করার জন্য নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আশা রাখি অচিরেই তা বাস্তবায়নের মুখ দেখবে। উপকূলজুড়ে মেরিন ড্রাইভ হলে এলাকার দৃশ্যপট পাল্টে যাবে বলে তিনি জানান।