বাঁশখালীতে নিয়মবহির্ভূতভাবে জিগজ্যাগ চিমনি ব্যবহার না করে বয়লার চিমনি দিয়ে ইটভাটার নির্মাণে পরিবেশ ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স, স্বাস্থ্য এবং কৃষি জমিতে অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনার অভিযোগে ৪টি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ রবিবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উপজেলার বাহারছড়া ইউপির ইলশা ও রত্নপুর গ্রামে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিজানুর রহমান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজারুল হোসেন, র্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের যৌথ দল।
বাঁশখালীর বাহারছড়ার একস্থানে ৩টি সহ ৫টি ইটভাটা রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ১টি ইটভাটা মামলার কারণে বন্ধ থাকলেও অপর ৪টি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেন তারা। অভিযান সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের রত্নপুর গ্রামে নবনির্মিত মো. আজিজের মালিকানাধীন ইটভাটাটি সম্পুর্ণরূপে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও মধ্য ইলশা গ্রামের অন্য ৩টি ইটভাটারে বয়লার চিমনি ফুটো করে দেয়া হয়েছে। কাঁচা ইট ও ইটভাটিগুলোও ভেঙে দেয়া হয়েছে।
ইটভাটাগুলো হলো উপজেলার বাহারছড়া ইউপির ইলশা গ্রামের মরর্তুজালী চৌধুরীর মালিকানাধীন চৌধুরী ব্রিকস্-১, জামাল উদ্দীনের চৌধুরী ব্রিকস্-২, জয়নাল আবেদীন ঝনটুর মালিকানাধীন এম.বি.এম ও সদ্য নবনির্মিত আজিজ আহমদের মালিকানাধীন ১টি ইটভাটা।
অভিযানকারী দলের চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজারুল হোসেন জানান, ইটভাটাগুলোর জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। কয়লার পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ, জিগজ্যাগ চিমনির পরিবর্তে বয়লার চিমনি ব্যবহার করা করে বনের কাঠ পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স, পরিবেশের ছাড়পত্র, স্বাস্থ্য ও কৃষি অফিসের ছাড়পত্র বিহীন সরকারের নির্দেশিত পরিবেশসম্মত জিগজ্যাগ ইটভাটার পরিবর্তে পাহাড়ি কাঠ দিয়ে বয়লারের নির্মিত ইটভাটাগুলোতে ইট তৈরির কাজ চলছিল।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছ থেকে অনেকবার নোটিশ দেওয়ার পরও ইটভাটার মালিকপক্ষ তা অমান্য করে পুনরায় ইটভাটা চালু করে।
বাঁশখালীতে দীর্ঘদিন ধরে লঠমনি, চাম্বল, শেখেরখীল, বাহারছড়ায় কয়েকটি ইটভাটায় বনের কাঠ পোড়ানো হলেও অভিযান পরিচালিত হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনা আক্তার ও পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক আফজারুল হোসেন, বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজুল ইসলাম, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত পুলিশের সমন্বয়ে টিম বাহারছড়ায় নতুন তৈরিকালীন ইটভাটাটি সময়ে গুঁড়িয়ে দেয়।
পরিবেশের অনুমতি না নেওয়া এবং জনবসতিতে ইটভাটা করায় ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং ইটভাটার চিমনির কাজে ব্যবহৃত ইট ও অন্যান্য মালামালগুলো ঐ সময়ে ২ লাখ ১৬ হাজার ৩শ’ টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়েছিণ। কিছুদিন পর আবারো এ ইটভাটাটি তৈরি করা হলে এলাকার জনগণ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে যেটা আজ আবারো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।