বাঁকখালীর কস্তুরাঘাট এলাকায় আবার দখল

পাঁচ সচিবসহ ১৫ জনকে আদালত অবমাননার নোটিশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | বুধবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২৩ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট এলাকায় উচ্ছেদের কয়েক মাসের মধ্যে আবারও তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নদী কমিশনের চেয়ারম্যান, কক্সবাজারের ডিসিসহ ১৫ সরকারি কর্মকর্তাকে আদালত অবমাননার নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস হাসানুল বান্না ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান।

নোটিশে আদালতের সকল আদেশ বাস্তবায়ন করে বাঁকখালী নদীটিকে দখল ও দূষণমুক্ত নদী ও নদী সংলগ্ন স্থানে নির্মিত ও নির্মিতব্য সকল স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। একই সাথে এ নদী সংলগ্ন প্যারাবন সংরক্ষণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানানো হয়। একই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত প্যারাবন ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি সকল দখলদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়। এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ ১৯ নভেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে নোটিশকারী আইনজীবীকে অবহিত করার অনুরোধ জানানো হয়। অন্যথায় নোটিশ প্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ অবমাননার অভিযোগে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলা হয়।

যাদেরকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে তারা হলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খলিলুর রহমান, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশিদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান কামরুন নাহার আহমেদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুল হামিদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এসএম শহিদুল ইসলাম, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হিল্লোল বিশ্বাস, পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক ফরিদ আহমেদ, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী ও কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নিজামী।

বেলার পক্ষ থেকে পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, বাঁকখালী নদীটি রক্ষায় বিদ্যমান সকল দখলদার ও স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। বেলার এক রিট মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট এ নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি কক্সবাজার পৌরসভাকে বাঁকখালী নদীতে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে নির্দেশনা দেন। আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও বিবাদীগণ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বাঁকখালী নদীর দখল ও দূষণ বন্ধ করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

আদালত অবমাননার নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাঁকখালী নদী দখলের এই দৃশ্য আমার কাছে অত্যন্ত বিস্ময়কর। মনে হচ্ছে এদেশে নদী রক্ষার যে আইনগুলো আছে, প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, উচ্চ আদালতের যে রায়গুলো আছে সেগুলো একেবারে অর্থহীন করে ফেলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাধারণ মানুষ কেন বিএনপির অপরাজনীতি ও হিংস্রতার শিকার হলো
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলী নদী দখলকারীদের তালিকা চেয়েছে হাই কোর্ট