বেল আমাদের নিত্যচেনা আরেকটি ফল। এর অন্য নাম শ্রী ফল। বেল ফল ও ঔষধ এই দুই হিসেবে ব্যবহৃত হয় । পেটের নানা অসুখে বেল খেতে দেয়া হয়। পাকা বেল খুবই পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। গরমের সময় বেলের সরবৎ এবং মোরব্বা সবার কাছে আকর্ষণীয়। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই বেল গাছ জন্মে। আমাদের প্রকৃতির কবি বিষ্ণু দে খুব সুন্দরভাবে বেলের কথা বলেছেন :
চামেলির দিন হয়ে গেল কবে শিরিষ চাঁপার দিন।
আম কাঁঠালের জামের বেলের ছায়ায় ঘুরে ঘুরে
এপাশে মহুয়া ও পাশে পলাশ আগুনের সম্ভারে। যদিও কোনও কোনও গাছ প্রায় সারা বৎসর ফল পাওয়া যায় । তথাপি বেলের প্রধান ঋতু জানুয়ারি হতে মে মাস। বর্তমানে পাকা বেল থেকে সুস্বাদু টফি তৈরি হচ্ছে।
বেল বলতে গেলে পুরোমাত্রায় দেশি ফল। বাংলাদেশ ও ভারত এর আদি জন্মস্থান। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র এবং সব ধরনের মাটিতে বেলগাছ জন্মে । এদেশে নানা জাতের বেল গাছ পাওয়া যায়। আকৃতি ও প্রকৃতি অনুসারে বেলের জাত নির্ণয় করা হয়। বর্তমানে বড় আকৃতির বেলের বেশ কদর বাড়ছে। এটি খেতে খুব সুস্বাদু। একে ‘দশসেরি জাতের বেল‘ বলা হয়। বেল কাঁচা পাকা উভয় অবস্থাতেই হালকা সবুজ রঙের হয় । গোলাকার এ ফলের বাইরের আবরণ শক্ত ও মসৃণ হয় ।
বেল বড় ধরনের গাছ। উচ্চতায় প্রায় ১০ থেকে ১৬ মিটার হয় । গরমের সময়ে সব পাতা ঝরে পড়ে। গাছে হালকা কাঁটা থাকে। ফলের ভিতর থাকে ৮–১৫টি ভাগ। প্রত্যেক ভাগে থাকে চটচটে আঠার সঙ্গে অনেক বীজ। ভিতরের শাঁস কমলা রঙের।
বেলে থাকে ৬৪.২% জলীয় অংশ, প্রোটিন ১.৩, স্নেহ ০.২%, খনিজ ১.৫%, আঁশ ২.২%, শর্করা ৩০.৬% খনিজের মধ্যে ক্যালসিয়াম ০.০৯%, ফসফরাস ০.০৫% এবং লৌহ ০.৩%। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যোপযুক্ত শাঁসে থাকে যথাক্রমে ২৩ ক্যালরি তাপ ও ভিটামিন ‘এ’ আই, ইউ ২৪০। পেটের পীড়ার জন্য এ ফল অত্যন্ত কার্যকর এবং এর ভেষজগুণও অনেক। গরমকালে বেল পাকে। বেলের ইংরেজি নাম – ইবধষ ও বৈজ্ঞানিক নাম Aegle Mormelos.