বস্তিতে বিশেষ টিকাদান ক্যাম্পেইন আজ থেকে

কাল পাচ্ছেন তৃতীয় লিঙ্গের ৫শ জন ৫শ শিক্ষার্থী ও ৬৫ হাজার শ্রমিক-কর্মচারীও পাবেন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২১ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের বস্তি এলাকার বাসিন্দা, তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া সমপ্রদায়) জনগোষ্ঠী ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের করোনার টিকার আওতায় আনতে বিশেষ কর্মসূচি (ক্যাম্পেইন) গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদ না থাকাসহ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে টিকার জন্য অনলাইনে যাদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ নেই, এ ধরনের জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে বিশেষ এই কর্মসূচি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
কর্মসূচির আওতায় বস্তির বাসিন্দাদের টিকাদান কর্মসূচি আজ ২১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে। মাঝখানে ২২ নভেম্বর বন্ধ রেখে পরবর্তী ২৩-২৫ নভেম্বর পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। নগরীর ঝাউতলা ছিন্নমূল বস্তি এলাকায় দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টিকা প্রয়োগ করা হবে। বিশেষ এই কর্মসূচির আওতায় চার দিনে মোট ২ হাজার বস্তিবাসীকে টিকা প্রয়োগ করা হবে বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে, তৃতীয় লিঙ্গের ৫০০ জনকে টিকার আওতায় আনা হচ্ছে আগামীকাল সোমবার। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রয়োগ করা হবে। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর একটি সংগঠনের তালিকার ভিত্তিতে এ টিকা দেয়া হবে।
এর বাইরে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ৫০০ শিক্ষার্থী এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৬৫ হাজার শ্রমিক-কর্মচারীও টিকা পাচ্ছেন এই কর্মসূচির আওতায়। শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিজিএমইএর অধীনে ১৫ হাজার, ক্লিফটন গ্রুপের ১০ হাজার, মাইডাস গ্রুপের ১ হাজার, কেইপিজেডের ইয়াং ওয়ান গ্রুপের ১৮ হাজার, ফোর এইচ গ্রুপের ২০ হাজার এবং বিএসআরএম গ্রুপের ৮০০ শ্রমিক-কর্মচারীকে বিশেষ এই কর্মসূচিতে টিকা প্রয়োগ করা হবে। এর মধ্যে চুয়েটের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মাইডাস গ্রুপ ও বিজিএমইএর অধীন শ্রমিক-কর্মচারীদের টিকা প্রয়োগ শুরু হবে ২৩ নভেম্বর। বাকি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের টিকাদান আজ থেকে শুরু হচ্ছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বস্তিবাসীদের টিকাদান কর্মসূচি সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকছেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নুরুল হায়দার ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া। তৃতীয় লিঙ্গের টিকা কর্মসূচিতে সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান, সিভিল সার্জন অফিসের এমও ডা. কাজী ফাহিমা আফরীন ও ডা. মোছাম্মৎ ফয়জুন্নেছা এবং জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া। শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের টিকাদান কর্মসূচি সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নুরুল হায়দার, এমও (সিএস) ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি এবং জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া।
চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. আসিফ খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তালিকাভুক্তির মাধ্যমে এসব জনগোষ্ঠীকে টিকা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্মসনদ না থাকার কারণে যাদের সুরক্ষা প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ নেই, এ ধরনের জনগোষ্ঠীর জন্যই মূলত বিশেষ এই ক্যাম্পেইন। অর্থাৎ এই ক্যাম্পেইনে যারা টিকা পাচ্ছেন বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের কেউ অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি। সংশ্লিষ্টদের তালিকার ভিত্তিতে এসব জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর মাঝে বস্তিবাসীরা টিকা পাচ্ছেন ১৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ এবং ছিন্নমূল সমিতির তালিকার ভিত্তিতে। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী টিকা পাচ্ছেন তাদের একটি সংগঠনের তালিকার ভিত্তিতে। ৫০০ জনের তালিকা আমাদের হস্তান্তর করা হবে। ওই তালিকার ভিত্তিতে ২২ নভেম্বর একদিনেই এ জনগোষ্ঠীকে টিকা প্রয়োগ করা হবে। এনআইডি না থাকায় সুরক্ষা প্লাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারা ৫০০ জন শিক্ষার্থীকে টিকা প্রয়োগে চুয়েট কর্তৃপক্ষ আমাদের অনুরোধ জানিয়েছে। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে চুয়েটের ৫০০ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে। এছাড়া অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে না পারা বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদেরও বিশেষ এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় সবাইকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রয়োগ করা হবে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাউজানে সড়কের পাশে পড়েছিল তরুণীর লাশ
পরবর্তী নিবন্ধকালুরঘাট সেতুতে দুর্ভোগের এক দিন