প্রথম টেস্টের ছিটেফোটাও নেই এই টেস্টে। কি ব্যাটিং আর বোলিং সবখানেই ব্যর্থ টাইগাররা। বিশেষ করে ব্যাটিংটা ছিল একেবারে জঘন্য। আর সে ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স বলেছেন যথেষ্ট পরিমাণে বল ছাড়তে পারেনি ব্যাটসম্যানরা। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বলের পর বল ছেড়ে ১৭৬.২ ওভার টিকে ছিল বাংলাদেশ। ওই ব্যাটিং পারফরম্যান্স দলকে এগিয়ে নেয় জয়ের পথে। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে ছাড়ার বলও খেলতে গিয়ে ব্যাটসম্যানরা ডেকে আনে বিপদ। তাতে ইনিংস শেষ মাত্র ৪১.২ ওভারেই। বাংলাদেশের উইকেট পতনের শুরুই হয় ছাড়ার বল খেলতে গিয়ে। বাইরের বলে ব্যাট পেতে দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন সাদমান ইসলাম। এরপর মোহাম্মদ নাইম শেখ, লিটন দাসরাও হয়ে যান একই পথের পথিক। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ১২৬ রানে অলআউট হওয়ার ব্যাখ্যায় সেটিই তুলে ধরলেন বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ প্রিন্স। কিউইদের প্রথম দিনের ব্যাটিং থেকে আমরা যদি শিক্ষা নেই, তারা অফ স্টাম্পের বাইরে প্রচুর বল ছেড়েছে। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের অবশ্য এটা সহজাতভাবেই আসে। তারা বাউন্সি উইকেটে খেলে অভ্যস্ত। আমাদের ছেলেরা বেশি অভ্যস্ত বল খেলতে । আগের টেস্টে আমরা বল খুব ভালো ছেড়েছি এবং ব্যাকফুটে সত্যিই ভালো খেলেছি। আশা করছি আমরা পরের দিন শুরুটা ভালো করতে পারব। অফ স্টাম্পের বাইরে কিছু বল ছেড়ে দিতে পারি আমরা যেন তারা আমাদের শরীর সোজা বল করতে বাধ্য হয়। দুই দলের দুইরকম ব্যাটিংয়ের সঙ্গে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে দুই দলের বোলিংও। বাংলাদেশের তিন পেসার প্রথম দিনের উইকেটেও খুব বেশি সুইং পাননি। আদর্শ লেংথে বল করতে পারেননি। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট ও টিম সাউদি শুরু থেকেই নিখুঁত লেংথে বল করার পাশাপাশি আদায় করে নেন দারুণ সুইং। বোল্টের শিকার ৫ উইকেট আর সাউদির ৩টি। আমাদের ব্যাটিং লাইন-আপের জন্য দিনটি কঠিন ছিল। নিউজিল্যান্ড শুরুটা ভালো করে এবং সুইং আদায় করে নেয় তারা। আগের দিন পিচ একটু নরম হতে শুরু করেছিল। দ্বিতীয় দিনে গতি বেড়ে যায়। তবে আগের দিনের নরম ভাবের কারণেই কিছু ক্ষত রয়ে যায়। পিচ যখন শক্ত ও গতিময় হয়ে ওঠে এবং পিচের গর্তে যথন বল পড়ে, তখন তা খেলা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। সঙ্গে সুইং তো ছিলই। কিউইরা আজকে দারুণ বোলিং করে আমাদের কাজ কঠিন করে তুলেছে। তবে পরে পিচ খানিকটা সহজ হয়ে আসে বলেও মনে করেন প্রিন্স। কঠিন সময়টায় আরেকটু লড়াই করে উইকেটে পড়ে না থাকায় তাই আফসোস করলেন ব্যাটিং কোচ। চা বিরতির দিকে আমরা বুঝে উঠতে পারি উইকেট এখনও ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো। কিছু বল তো ব্যাটের কানার বাইরে দিয়ে যাবেই। এই কন্ডিশনে তা স্বাভাবিক। আরেকটু টিকে থাকতে পারলে জুটি গড়ে তুলতে পারতাম আমরা। এই ইনিংসের ভুল থেকে শিক্ষা আর আগের টেস্টের অভিজ্ঞতার ভরসায় দল দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো ব্যাটিং করবে। তেমন আশা প্রিন্সের। এটা বলাই যায় যে আমরা জানতাম, নিউজিল্যান্ড এই টেস্টে আরও বেশি তাড়না দেখাবে। দুটি ম্যাচের যদি তুলনা করেন, তাহলে দেখা যাবে যে এখানে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। এমনকি এক নম্বর দলের জন্যও। গত সপ্তাহে আমরা নিজেদের এগিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। এই ম্যাচে এখনও পর্যন্ত ওরা অনেক এগিয়ে। আমাদের জন্য খেলায় ফেরা কঠিন করে তোলে ওরা। তবে আমরা চেষ্টা করব আরেকটি দিন লড়াই করে টিকে থাকার।