বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ দৃশ্যমান হবে : মেয়র

ময়লা ফেলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করলে জরিমানা ও শাস্তি

| বুধবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:২০ পূর্বাহ্ণ

আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ দৃশ্যমান পর্যায়ে নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

গতকাল মঙ্গলবার টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে প্রকৌশল, পরিচ্ছন্ন বিভাগ এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দের সাথে জলবদ্ধতা বিষয়ক সমন্বয় সভায় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এ ঘোষণা দেন।

নির্দেশনায় মেয়র বলেন, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে স্বস্ব অঞ্চলের জলাবদ্ধতার কারণগুলো চিহ্নিত করবেন। প্রত্যেক আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে ২০ জন করে শ্রমিক দিয়ে ১২০ জনের ছয়টি বিশেষ টিম করে দেয়া হয়েছে। আপনারা এই টিমগুলোকে কাজে লাগিয়ে এলাকার সার্ভিস ড্রেনগুলো থেকে ময়লা পরিষ্কার করে ফেলবেন। প্রতিদিন এই টিমটি কাজ করছে কিনা, করলেকোথায় করছে, কী করছে তা ভিডিও এবং ছবি সংগ্রহ করবেন। এছাড়া, স্বস্ব অঞ্চলের যে সমস্ত কমিউনিটি সেন্টার, রেস্টুরেন্ট, হাসপাতাল, মার্কেটসহ বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যত্রতত্র ময়লা ফেলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে তাদের তালিকা করবেন। ইতোমধ্যে ৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট প্রদানের বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা সেই তালিকা ধরে ম্যাজিস্ট্রেটদেরকে দিয়ে জরিমানাসহ আইনানুগ শাস্তির আওতায় আনবো। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই বরাদ্দের অর্থ সুপরিকল্পিতভাবে ব্যয় করতে হবে।

জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সাইনবোর্ড স্থাপনের বিষয়ে মেয়র বলেন, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড জুড়ে বিভিন্ন খালনালা ইত্যাদির পাশে জনসচেতনতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে। এজন্য আপনারা যথোপযুক্ত এলাকার তালিকা প্রদান করবেন। যেহেতু সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করছে, উনাদের সাথে সভা করেন। জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথেও একযোগে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করা যায়সে বিষয়ে সভা করে যৌথ সিদ্ধান্ত নিন। যে সমস্ত জায়গায় স্কেভেটর ব্যবহার প্রয়োজন সেখানে স্কেভেটর ব্যবহার করুন, আর যেসব জায়গায় ম্যানুয়ালি খনন প্রয়োজন সেখানে শ্রমিক ব্যবহার করুন। পরিচ্ছন্ন শ্রমিকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করুন।

মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের অনেক সমস্যা আছে, অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার কারণে বৃষ্টি বেশি হলে মানুষ খুব অসহায় অবস্থায় থাকে। জলমগ্ন থাকে শহর। চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া। খালের সীমানার ভেতরে অবৈধ ভবন নির্মাণ করায় এটির প্রশস্ততা কমে বৃষ্টি ও বন্যার পানি অপসারণের ক্ষমতা হ্রাস পায়। পরিকল্পিতভাবে ময়লা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ এবং খাল সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

সভায় আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, তারা বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করেছেন এবং দেখেছেন খালনালায় প্রচুর ময়লা জমে আছে, যা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। অবৈধ বাজার বসার কারণেও পরিষ্কার কার্যক্রমে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় নগরীজুড়ে অবৈধ স্থাপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, বেশ কিছু ওয়ার্ডে জনবল সংকট রয়েছে। এই এলাকাগুলোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ এবং তাদের দক্ষতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিতে হবে। কর্মীদের উপস্থিতি এবং কাজের গুণমান নিশ্চিত করতে নিয়মিত নজরদারি বাড়াতে হবে। যে কোনো প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করতে হলে সঠিক তদারকি এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তা অপরিহার্য। সকলের সহযোগিতায় প্রকল্পগুলোকে আরও কার্যকরী এবং দ্রুত বাস্তবায়িত করা যাবে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেমসহ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগুরুত্বপূর্ণ চার ইস্যুতে আজ থেকে মাঠে নামছে বিএনপি
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬