বিপিএলের চট্টগ্রাম ভেন্যুর টিকেটের দাম এবং প্রাপ্তি স্থান সবই আগের দিন ঘোষনা করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ঘোষনা অনুযায়ী এম এ আজিজ স্টেডিয়াম এবং সাগরিকাস্থ বিটাক মোড়ের বুথে টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা করে বিসিবি। আর মধুমতি ব্যাংকের দুটি শাখা আগ্রাবাদ এবং ও আর নিজাম রোড শাখায় টিকেট বিক্রির ঘোষনা দেওয়া হয়। বিসিবির ঘোষনা মতে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে টিকেট বিক্রির কথা। যেহেতু টিকেটের তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি তাই দর্শকরা সেই ভোর থেকেই লাইন দিয়ে দাড়ায় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের বুথে। কিন্তু বুথ খুলতেই বাধে বিপত্তি। বুথের বাইরে যে ব্যানার টানানো ছিল তাতে লেখা রয়েছে টিকেটের এক মূল্য। আর যখন টিকেট কিনতে গেলেন দর্শকরা তখন বলা হলো ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। ফলে দুইশ টাকার টিকেটের দাম বেড়ে হলো ২৩০ টাকা। একইভাবে প্রতিটি টিকেটেই ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে বিক্রির চেষ্টা করে বিসিবির কর্মীরা। শুরু হয় হৈ চৈ। দর্শকরা ভ্যাট দিয়ে টিকেট কিনবেনা। এদিকে ততক্ষনে টিকেট প্রত্যাশিদের লাইন ক্রমশ লম্বা হতে থাকে। কিন্তু একদল দর্শক বাড়তি দামে টিকেট বিক্রি করতে দেবেনা। বেলা যত বাড়ছিল ততই টিকেট প্রত্যাশির সংখ্যা বাড়ছিল।
এরই মধ্যে হোটেল রেডিসন থেকে ফরচুন বরিশাল দলের টিম বাস জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বেলা ১২ টায় তাদের বাস হোটেল ত্যাগ করার কথা। কিন্তু দর্শকরা সে বাস দেখে ছুটে গিয়ে হোটেল রেডিসনের মূল দুই ফটকে অবস্থান গ্রহন করে। ফলে বের হতে পারছিলনা ক্রিকেটারদের বহনকারী বরিশাল দলের বাস। প্রায় ১৫ মিনিট পর পুলিশ এসে বুঝিয়ে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। আর বরিশাল দলের ক্রিকেটারদের বহনকারী বাসটি ছেড়ে দেয়। কিন্তু টিকেটের বাড়তি দামের সমাধান মিলছিলনা। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের বুথে বিসিবির যে সব কর্মীরা টিকেট বিক্রি করছিল তারা জানান এখানে তাদের কিছুই করার নাই। তাদেরকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সে মতে তারা বিক্রি করতে বসেছে। তারা জানান ঢাকা এবং সিলেটেও ভ্যাট সহ টিকেট বিক্রি করা হয়েছে। তবে জানা যায় সাগিরকাস্থ বিটাক মোড়ের বুথ এবং মধুমতি ব্যাংকের দুটি শাখায়ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট সহ টিকেট বিক্রি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক অফিসার মিলে দর্শকদের ভ্যাট সহ টিকেট কেনার অনুরোধ করেন। তারা বলেণ যেহেতু অন্য তিন জায়গায় টিকেট বিক্রি শুরু হয়ে গেছে সেহেতু এখানে কম দামে টিকেট বিক্রির কোন সুযোগ নাই। শেষ পর্যন্ত বেলা ১২ টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের বুথে টিকেট বিক্রি।
নানা ভোগান্তির পরও প্রত্যাশিত টিকেট পেয়ে খুশি দর্শকরা। প্রথম যে দর্শক টিকেট সংগ্রহ করেছেন তিনি প্রতিক্রিয়ায় জানান আামরা সেই ভোর থেকেই টিকেটের জণ্য লাইন দিয়ে আছি। কিন্তু ক্রিকেট বোর্ড ব্যানারে লিখল এক রকম আর আমাদের কাছ থেকে টাকা নিল আরেক রকম। তিনি ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন ক্রিকেট বোর্ড ইচ্ছা করেই আমাদের কাছ থেকে বাড়তি টাকাটা নিল। আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ। খেলা দেখার ইচ্ছা আছে বলেই টিকেটের জণ্য এত কষ্ট করছি। সেখানে যদি আগে ঘোষনা না দিয়ে আমাদের কাছ থেকে এভাবে বাড়তি টাকা নেওয়া হয় তাহলে সেটা আমাদের উপর অবিচারের শামিল। আমরা এ ঘটনার সুষ্ট সুরাহা চাই। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই প্রথম দিনের টিকেট বিক্রি সম্পন্ন হয়েছে।