ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রাম কেন কম বরাদ্দ পাবে? এ প্রশ্ন তুলেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হেসেন। একইসঙ্গে খাল–নালা পরিষ্কারে ২৯৮ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প এবং ময়লাকে সম্পদে রূপান্তরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রস্তাবিত প্রকল্পের অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এ সময় কিছুটা হতাশা ব্যক্ত করে প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো সাংবাদিকদের জানা উচিত, আমরা কি উদ্যোগ নিয়েছি আর কি হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের উনাকে দিয়ে এসেছি। আর কোথায় যাব?
গতকাল শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতি চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে টাইগারপাস অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সভাপতি অভীক ওসমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ভূঁইয়া নজরুল।
মেয়রের কণ্ঠে ক্ষোভ ও হতাশা : ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ২০২২ সালে একটা প্রকল্প জমা দেওয়া হয় ৩৯৮ কোটি টাকা। সেটা যেভাবে আছে ওভাবে ওখানে পড়ে আছে। আমি বেশ কয়েকবার মন্ত্রণালয়ে যাবার পর একটা জায়গায় এসেছে। ফাইনালি সেটা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে আরো ১০০ কোটি টাকা কাটিয়ে ২৯৮ কোটি টাকা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেছি। উনাকে তিনটি কাজের প্রস্তাব দিয়েছি। প্রথমত জলাবদ্ধতামুক্ত করতে চাইলে ২৯৮ কোটি টাকার প্রকল্পটি দিতে হবে। আমার মেশিনারিজ দরকার। যে মেশিন আছে সেগুলো ১৫–২০ বছরের পুরনো। এ মেশিনগুলো যখনই কাজ করতে যাই ফেল করছে সেখানে। উনি বলেছেন, দেখছি। মেয়র বলেন, দ্বিতীয়ত বলেছি (প্রধান উপদেষ্টাকে), ময়লাকে সম্পদে পরিণত করতে হবে। মানে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট। ইউকের একটা প্রজেক্ট উনাকে সাবমিট করেছি। বলেছি এটা আপনি এলজিআরডিকে দিবেন। এলজিআরডি দিলে তিন–চার মাসের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারব। কিন্তু অদ্যাবধি সেটা হয়নি। তিনি বলেন, এটা আসলে দুর্ভাগ্যজনক আমাদের জন্য। একটা স্টেজে যিনি দায়িত্বে (বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান) আছেন উনার সঙ্গে দেখা করেছি। উনাকে লাস্ট যখন জিজ্ঞেস করেছি, উনি আমাকে যে জবাবটি দিয়েছেন সেটা আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, উনি বলেছেন, ‘আগে জলাবদ্ধতা কতটুকু কমে সামনের বর্ষায় দেখি তারপর বরাদ্দ দেব।’ সো ফানি। এটা যদি আমাদের শুনতে হয়, কেমন লাগে।
শাহাদাত বলেন, জলাবদ্ধতার জন্য বাজেট কি দিয়েছে? ৫ কোটি টাকা নালা পরিষ্কার করার জন্য। আড়াই কোটি টাকা একটা বঙ কালভার্ট পরিষ্কারের জন্য। দ্যাটস অল। এই ৮–১০ কোটি টাকা সংস্কার করার জন্য দিয়েছে। অথচ আমরা এগুলো চাইনি। আমরা চেয়েছি মেশিনারিজ কেনার জন্য ৩০০ কোটি টাকা দেন। এগুলো আমি আজ অত্যন্ত ক্ষোভের সাথে জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমার এই জন্য রাগ লাগছে, শহর পরিষ্কার করার জন্য একটা প্রজেক্ট দিয়েছি সেটাও পাচ্ছি না। আমাকে বারবার ঢাকা যেতে হচ্ছে, মিনিস্ট্রিতে যেতে হচ্ছে। কেন? এটা তো জনসম্পৃক্ত প্রজেক্ট। ১৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু এই ৩০০ কোটি টাকা দিতে পারছেন না, যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার।
মেয়র বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সাথে সেদিনও সভাতে বলেছি, আমার এই প্রজেক্টগুলো হয়নি। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্ট রিসাইক্লিং প্রসেসের জন্য গত ৬ মাসে দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, নেদারল্যান্ড, চীন ও জাপানসহ কমপক্ষে ১০টি দেশের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেছি। ফাইনালি জাপান একটা এমওইউ করেছে। তারা এটাকে ইকো ফ্রেন্ডলি করে দিতে চাইছে। কিন্তু বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার জন্য ইউকের প্রস্তাবনাটি উনার (প্রধান উপদেষ্টা) কাছে আছে। কিন্তু এখনো কোনো আলো দেখছি না। এ জিনিসগুলো অত্যন্ত হতাশাজনক আমাদের জন্য। আপনারা মন খারাপ করবেন দেখে বলি না। কিন্তু চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখিনি আমি। কারণ আমি এই এলাকার ছেলে। আমার বাড়ি বাকলিয়া চাক্তাই খালের পাশে। তিনি বলেন, একটি কোরিয়ান গ্রুপ এখানে এসেছে। তাদের সাথেও আমি কিন্তু আনঅফিশিয়ালি এমইউ সাইন করে ফেলেছি, তাদের বলেছি আপনারা শুরু করেন।
ডা. শাহাদাত বলেন, আপনারা (সাংবাদিকরা) লিখেন, ৩০০ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি এখনো দেওয়া হয়নি। আপনানা লিখেন, জিনিসগুলো দরকার। গত ১৫–১৬ বছরে সিটি কর্পোরেশন একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। যে যন্ত্রপাতিগুলো নষ্ট হয়ে পড়ে আছে, আমরা আস্তে আস্তে ঠিক করছি। তিনি বলেন, ২০২২ সালে প্রকল্পটি দেওয়া হয়েছে। আজকে হলো ২০২৫ সাল। জলাবদ্ধতার জন্য এই অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি। খাল–নালা পরিষ্কারের মেশিনারিজ যদি না থাকে কিভাবে জলাবদ্ধতার এত বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবেন? পুরনো মেশিন নিতে গিয়ে ভেঙে যাচ্ছে, তাই আমাদের ভাড়া করতে হচ্ছে। ১৫–১৬ লাখ টাকায় একেকটা মেশিন আমরা ভাড়া করছি।
কম বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন : মেয়র বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামে জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয় না। অথচ চট্টগ্রাম থেকে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সবকিছু নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চট্টগ্রামকে দেওয়ার বেলায় বৈষম্য করা হয়। এ সময় ঢাকা শহরের ৭০–৮০ লক্ষ মানুষের জন্য যে বাজেট দেওয়া হয় চট্টগ্রাম শহরে ৭০ লক্ষ মানুষের জন্য সে বাজেট দেওয়া হয় কিনা প্রশ্ন তুলে মেয়র বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) লিখেন না কেন? ৭০–৮০ লাখ মানুষের বাজেট কি এটাই? সিটি কর্পোরেশন একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। জনগণ থেকে কর নিয়ে কি আমি মানুষকে সেবা দিব? তাহলে কি মানুষকে করের বোঝা চাপাব? শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠানে বছরে ৮০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। কাজেই আপনাকে তো বাজেট দিতে হবে। সে বাজেট আপনি ঢাকাতে দেন, চট্টগ্রাম শহরে দিতে চান না কেন?
শাহাদাত বলেন, বরাদ্দ হচ্ছে মাত্র ৫ কোটি। কিন্তু তাতে প্রকল্প ১৪৮টা। মানুষ তো ভাববে যেন ৫ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। এটা হাস্যকর। তাও সেটা আমাদের নয়, জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। বলার পর আমাদের ৫ কোটির প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছে খালগুলো পরিষ্কার করার জন্য।
আমরা ম্যানেজার, আমাদের কথা শুনতে হবে : ডা. শাহাদাত বলেন, শহরকে যখন জলাবদ্ধতামুক্ত করতে চাইবেন, আমরা কি চাইছি দেখতে হবে। কারণ আমরা হচ্ছি ম্যানেজার, আমরাই তো জানব কীভাবে ম্যানেজ করতে হবে। আমরা জানি এখানে কী লাগবে। কিন্তু আপনারা দূর থেকে যদি বলেন, এরা অন্যান্যদের মতো খেয়ে ফেলবে কিনা? এটা আমি দায়িত্ব নিয়ে বলেছি যখন ট্রাস্ট করতে হবে। হয়তো অন্য অনেক বিষয়ে তাদের ট্রাস্ট চলে গেছে। কিন্তু এই মেশিনারিজগুলো জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য লাগবে। যেটা তারা বুঝতে পারেনি।
মেয়র বলেন, তারপরও বলছি, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা কাজ করেছি। যে সমন্বয় ছিল না সেটা আমরা এনেছি। এখন বৃষ্টি হচ্ছে, প্রতিটি জায়গায় গিয়ে আমি দেখছি। এই আশাবাদ ব্যক্ত করতে চাই, যদি সব ঠিকঠাক মতো আমাদের কাজগুলো ক্লিক করে ৫০–৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতা আমরা কমিয়ে আনব। কাজ একদম হয়নি তা বলা যাবে না। আমরা চেষ্টা করেছি সর্বোচ্চ। আমরা ট্রাই করেছি আওয়ার লেভেল বেস্ট সেটা করার জন্য।
তিনি বলেন, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী সিডিএর বিশাল রোল প্লে করা উচিত। প্ল্যান পাশ করার সময় ৩০ শতাংশ জায়গা রাখছে কিনা? আজকে ভূগর্ভে পানি জমা হচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা ট্রাই করছি। কিন্তু আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। ইমিডিয়েটলি সেবাদানকারী সংস্থাগুলোকে যদি সম্পৃক্ত করতে পারি এবং আজকের কাজ আজকেই করে ফেলব এই চিন্তা যদি থাকে তাহলে আমরা সফল হব। আজ যে সমস্যা, সেটা আজকেই সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, এই শহরটা আমাদের, আমার একার নয়। এই শহরে আমার বাপ–দাদারা ছিল, আমি আছি, আমার নেঙট জেনারেশনও থাকবে। কাজেই আমরা যখন শহরকে ভালোবাসতে পারব তখন দেখবেন এই শহরটি সুন্দর রাখা আমাদের জন্য অসম্ভব কিছু না।
মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান নেই, সেটাও আমরা করে দিয়ে যাব। মেগা প্রকল্পের বাইরে থাকা ২০টি খাল নিয়ে আমি পাওয়ার চায়নার সাথে কথা বলেছি। তিনি বলেন, পাহাড় কাটা নিয়ে আমাদের কঠিন সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আমরা আইন বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি; বিশেষ করে দোকানের ময়লা বাইরে ফেলেছে তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার চিন্তা–ভাবনা আছে।
তিনি বলেন, সমন্বয় নিশ্চিতে চেষ্টা করছি। নগর সরকার নিয়ে আমি বারবার ভয়েস রেইস করেছি। সিটি গভমেন্ট করতে না পারলে প্ল্যান্ড আর্বানাইজেশন কখনো সম্ভব না। নগর সরকারে আপনাকে যেতেই হবে। এটা ছাড়া পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলা সম্ভব না। এটাও প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি।
তিনি বলেন, জনস্বার্থে বহদ্দারহাটে আমাদের মার্কেট ভেঙে দিয়েছি। জনস্বার্থে যেখানে যেটা দরকার সেটা আমি করব। যদি সেটা আমার প্রচুর আয়বর্ধক প্রতিষ্ঠানও হয় সেটাতে আমি কোনো ছাড় দিব না।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এস এম নছরুল কদির, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা, জনসংযোগ সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি এ এস এম বজলুল হক, পেশাজীবী নেতা ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, ডা. একেএম ফজলুল হক, সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, সিডিএ বোর্ড মেম্বার জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ শাহনওয়াজ, আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মনজারে খোরশেদ আলম, সিডিএ বোর্ড মেম্বার স্থপতি ফারুক আহমেদ, স্থপতি জেরিনা হোসেন, স্থপতি আশিক ইমরান, চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক এবং অধ্যক্ষ সুরাইয়া বেগম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ সাকী।
মূল প্রবন্ধে ভূঁইয়া নজরুল ২০১৭ সালে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের অনুমোদন হলেও এখনো কেন জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর হচ্ছে সে প্রশ্ন তোলেন। এক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবসম্মত কিনা, প্রকল্প নেওয়ার আগে সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছে কিনা ও প্রকল্পের অর্থ ছাড় যথার্থ ছিল কিনা সে প্রশ্ন রাখেন তিনি।
মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, জলাবদ্ধতার জন্য ৫৫ শতাংশ দায়ী নাগরিকারা। বাকি ৪৫ শতাংশ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায় আছে। তিনি বলেন, প্রবর্তক মোড় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির পেছনে হিজরা খালে তোষক থেকে শুরু করে এমন কোনো জিনিস নাই যা পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ২০১৭ সালের পর থেকে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। সিটি কর্পোরেশন ড্রেনেজ ম্যানেজমেন্ট ইউনিট গঠন না করলে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।
অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান পাহাড় ও দিঘি রক্ষায় তা কর্পোরেশনকে কিনে ফেলার পরামর্শ দেন।