বন্যা : কুড়িগ্রাম-গাইবান্ধায় অবনতি নীলফামারী-লালমনিরহাটে অপরিবর্তিত

| রবিবার , ৭ জুলাই, ২০২৪ at ৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ

উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের নদীর পানি বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এর মধ্যেই কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক রুপ ধারণ করেছে। অন্যদিকে তিস্তা নদীর পানি সকালে বৃদ্ধি পেলেও বিকাল থেকে কমতে শুরু করায় লালমনিরহাটে ও নীলফামারীতে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

কুড়িগ্রামে পানিবন্দি প্রায় দুই লাখ মানুষ : কুড়িগ্রামে টানা ৬দিন ব্যাপী স্থায়ী বন্যায় প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ব্রহ্মপুত্র নদী তীরবর্তী বন্যা প্লাবিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে শনিবার বিকালে নাগেশ্বরীর মিয়াপাড়া এলাকার দুধকুমার নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১০০ মিটার ভেঙে নতুন করে ১২ গ্রামের ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোডের্র উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি।

গাইবান্ধায় পানিবন্দি প্রায় ৬৮ হাজার পরিবার : গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। জেলার ৪ উপজেলার ২৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৬৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমির ফসল। রাস্তাঘাট ডুবে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

বন্যা দুর্গত এলাকার লোকজন পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।

নীলফামারীতে বিপদসীমার নিচে তিস্তার পানি : উজানের ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতে নীলফামারীতে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা নদীর পানি। শনিবার বিকাল ৩টায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। নীলফামারীর পূর্বখড়িবাড়ি গ্রামে স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বালুর বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার বিধ্বস্ত হলে স্থানীয়রা বাঁশের পাইলিং ও বালির বস্তা ফেলে মেরামতের চেষ্টা করছেন।

লালমনিরহাটে ডুবে গেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চর : উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে লালমনিরহাটে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তা ও ধরলার পানি। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়ি ও রাস্তা ঘাট পানি নিচে তলিয়ে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। প্রায় হাজার পরিবারের ঘরবাড়িতে পানি উঠে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।

বগুড়ায় বন্ধ ৫৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্ব পাশে এবং চরাঞ্চলের ৫৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় পানি উঠায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কোনো স্কুলের ক্যাম্পাসে হাঁটু পানি এবং কোনোটায় কোমর পানি হয়েছে। বন্যার কারণে শিক্ষার্থীরাও পরিবারের সঙ্গে ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নিয়েছে। শনিবার ধুনটের শিমুল বাড়ি গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামের অর্ধেক বসতবাড়ি পানির নীচে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায় কোমর পানি। ছাত্রসহঅভিভাবকরা আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে, কেউবা চলে গেছে স্বজনদের বাড়িতে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসারাদেশে আরও ২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত
পরবর্তী নিবন্ধপাঁচলাইশে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার