বন্ধুর স্ত্রীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় শেখ রাসেল (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টাইগারপাস এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এক বছর আগে করা এ মামলায় এতদিন ধরে পলাতক ছিলেন আসামি। শেখ রাসেল ডবলমুরিং থানাধীন মতিয়ারপুল এলাকার মৃত ফজল হকের ছেলে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব–৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী নারী ডবলমুরিং এলাকার বাসিন্দা। তার স্বামী থাকেন প্রবাসে। ২০১৭ সালে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী দেশে আসলে পরিচয় হয় রাসেলের সঙ্গে। এরপর তাদের মধ্যে তৈরি হয় সখ্যতা। এ সুবাদে বন্ধুর বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল রাসেলের। এরপর মায়ের চিকিৎসার কথা বলে রাসেল ৩ লাখ টাকা ঋণ নেন ওই প্রবাসীর কাছ থেকে। পরে ওই নারীর স্বামী বিদেশে চলে যান।
বিদেশে যাওয়ার আগে ভুক্তভোগীর স্বামী রাসেলকে বলে যান যে, ঋণের টাকা প্রতি মাসে কিছু কিছু করে তার স্ত্রীকে যেন দেয় এবং তার সংসারের খোঁজ রাখে। টাকা দিতে প্রায় ওই নারীর বাসায় যেতেন রাসেল। এভাবে ওই নারীর সঙ্গেও সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। সম্পর্কের ফাঁকে ওই নারীর ব্যক্তিগত কিছু মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখেন রাসেল। এরপর থেকে ওই নারীকে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। ওই নারী প্রস্তাবে রাজি না হলে তার কাছে থাকা ছবি–ভিডিও গৃহবধূর স্বামীসহ সবার কাছে ছড়িয়ে দিয়ে তার সংসার ভেঙে দেয়ার হুমকি দেয়। কাজ হয়নি তাতেও। ক্ষুব্ধ হয়ে ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় রাসেল।
এই ঘটনায় ২০২২ সালের ১৫ জানুয়ারি ডবলমুরিং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ভুক্তভোগী নারী। সেই সময়ে ডবলমুরিং থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রাসেল দোষ স্বীকার করেন এবং তার মোবাইল থেকে ওই নারীর সে–ই ছবি ও ভিডিও ডিলিট করে দেন। এই ধরনের কাজ আর না করার শর্তে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ছাড়া পাওয়ার পর রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে ফের ওই নারীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও এডিট করে আত্মীয়স্বজন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। ভুক্তভোগী নারী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। মামলা হওয়ার পর রাসেল এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।