গাজার এক তৃতীয়াংশ হাসপাতালই বন্ধ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই হাসপাতালগুলোতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, তারা শুধু গুরুতর রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। এদিকে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রাহমান বিন জসিম আল থানি বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে যে পরিমাণ শিশু নিহত হয়েছে তার চেয়ে বেশি শিশু নিহত হয়েছে গাজায়। কিন্তু এ ব্যাপারে একই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। এর আগে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেন, আমরা এমন আচরণ করছি যেন ফিলিস্তিনি শিশুদের জীবনের কোনো গুরুত্ব নেই, তারা যেন নাম–পরিচয়হীন।
জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার এক তৃতীয়াংশ হাসপাতাল এবং প্রায় দুই তৃতীয়াংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইতোমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরায়েলের ক্রমাগত বিমান হামলা এবং জ্বালানির অভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপর থেকেই গাজায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। একই সঙ্গে গাজায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ ওই অঞ্চলকে পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জেনারেটরই ছিল একমাত্র ভরসা। কিন্তু জ্বালানির অভাবে সেটাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
যতই দিন যাচ্ছে গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে, জ্বালানির অভাবে সেখানকার হাসপাতালগুলোতে মারাত্মক সংকট তৈরি হয়েছে। একদিন আগেই গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করে যে, সেখানকার হাসপাতালগুলোর ইলেক্ট্রিক জেনারেটর আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা চালু থাকতে পারবে। এই সময়ের মধ্যে জ্বালানির ব্যবস্থা করা না গেলে জেনারেটরও বন্ধ হয়ে যাবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরো টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে বলেন, গাজায় খুবই ধীর গতিতে মানবিক সহায়তা আসছে এবং এটা প্রকৃত অবস্থার কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না। তিনি বলেন, ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। গাজায় ইতোমধ্যেই কয়েক দফায় ত্রাণ সরবরাহ করা হলেও কোনো ধরনের জ্বালানি সরবরাহ করা হচ্ছে না। কিন্তু হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম চালু রাখার জন্য অবশ্যই জ্বালানি সরবরাহ করতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ত্রাণ সরবরাহের ক্ষেত্রে হাসপাতালের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর দিকে জোর দেওয়া উচিত এবং এগুলো যত দ্রুত সম্ভব সরবরাহের অনুমতি দিতে হবে।
এদিকে ইসরায়েলের বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী নিহত হয়েছেন। তবে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে তার গর্ভের সন্তান। গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একটি হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিহত ওই নারীর ডেলিভারির মাধ্যমে সদ্যজাত শিশুটিকে বাঁচাতে সক্ষম হয়েছেন।