চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক বছর পর ২৫ টন প্যারাসিটামল ও রাসায়নিক পদার্থ ধ্বংসের জন্য সুনামগঞ্জের ছাতকে পাঠাচ্ছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কারখানার জিও সাইকেল প্রকল্পে এসব রাসায়নিক ধ্বংস করা হবে। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বন্দরের পি শেডে পড়ে থাকা এসব পণ্য পর্যায়ক্রমে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন কাস্টমস কর্তারা।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা যায়, সাধারণ অন্যসব পণ্য ধ্বংস করার ক্ষেত্রে স্কেভেটর দিয়ে বড় গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। তবে রাসায়নিক পদার্থ মাটির গুণাগুণ নষ্ট করে ফেলে বিধায় আগের বছরের মতো সুনামগঞ্জে ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ধ্বংসযোগ্য রাসায়নিকের মধ্যে রয়েছে ৮ টন সোডিয়াম ক্লোরাইড, সোডিয়াম সালফেট, কস্টিক সোডা, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, ব্যাটারি তৈরির উপকরণ এবং ওষুধ তৈরির নানা রাসায়নিক পদার্থ। এছাড়া রয়েছে লেবানন থেকে ফেরত আসা ত্রুটিযুক্ত প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কেজি প্যারাসিটামল সিরাপ। এসকেইফ ফার্মাসিউটিক্যালস এই সিরাপ লেবাননে রপ্তানি করেছিল। কিন্তু ত্রুটি থাকায় তা ফেরত পাঠায় আমদানিকারক। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের উপ- কমিশনার (নিলাম শাখা) মো. আল আমিন বলেন, নিয়মিত নিলাম কার্যক্রম চালানোর পাশাপাশি আমর নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংসও করছি। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা ২৫ টন রাসায়নিক পদার্থ ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা প্রথমে এসব রাসায়নিক সচরাচর নিয়মে মাটিচাপা দিয়ে ধ্বংসের চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর আমাদের সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। তাই এসব পণ্য গত বছরের মতো সুনামগঞ্জের ছাতকে পাঠানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে সুনামগঞ্জের ছাতকে ৫৭ টন বিভিন্ন ধরণের কঠিন পদার্থ, হাইড্রোজেন পারঅঙাইড, ব্লাঙ্ককিট, ডাইথোনাইট এবং সালফঙিলেট, হাইড্রোক্লোরাইড, নাইট্রো গ্লু সলিউশন, কস্টিক সোডা, ফার্মাসিউটিক্যাল উপাদান, বেভারেজ কনসেন্ট্রেটসহ বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যাল ধ্বংস করা হয়েছে। এরমধ্যে অনেক বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থও ছিল। ১০-১৫ বছর ধরে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রি-কেমিক্যাল শেডে এসব কেমিক্যাল রাখা হয়েছিল। প্রসঙ্গত, গত বছরের ৪ আগস্ট লেবাননের বৈরুত বন্দরে এ ধরনের বিপজ্জনক রাসায়নিকের বিস্ফোরণে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা এসব রাসায়নিক পণ্যের বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে।