বন্দরের চারগুণ স্টোর রেন্ট প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ মে, ২০২৫ at ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

বন্দর বা আইসিডি হতে মালামাল খালাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ ছাড়াও আরও অন্যান্য এজেন্সির সম্পৃক্ততা থাকে। এছাড়া ডকুমেন্টেশন প্রসেসিংয়ে অনেক সময় লেগে যায়। ফলশ্রুতিতে আমদানি পণ্যের চারগুণ বিলম্বের মাশুল আদৌ যৌক্তিক নয়। তাই বিষয়টি চারগুণ স্টোর রেন্ট বা বিলম্ব মাশুলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত। গতকাল চট্টগ্রাম গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ এসোসিয়েশন এবং চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল এক প্রেস বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি বিভাগ গঠন করে গত ৫ মে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ জারি করে। সরকারের রাজস্ব খাতে এ ধরনের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাজস্বখাতে সংস্কারের বাস্তবমুখী এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে ব্যবসায় শৃঙ্খলা, দুর্নীতি হ্রাস ও কর ফাঁকি রোধে সরকার সফল হবে বলে আমরা মনে করি। সরকারের রাজস্ব খাতে এ ধরনের যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের বিপক্ষে এনবিআর এবং কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী ধর্মঘট বা কলম বিরতি পালন করছে। যার ফলে ব্যবসায়ীরা সময় মতো মালামাল খালাস করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। পোর্ট ডেমারেজ বা বিলম্ব মাশুল হিসাবে বিপুল অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এছাড়াও ঈদসহ বিভিন্ন সরকারি ছুটির কারণে দ্রুত মালামাল ডেলিভারি নিতে পারছেন না বিধায় সুষ্ঠু ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরা বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর অভ্যন্তরে এবং কমলাপুর আইসিডিতে স্থিত আমদানিকৃত এফসিএল কন্টেনারের কমন ল্যান্ডিং ডেটের অষ্টম দিন হতে প্রযোজ্য স্ল্যাবের চারগুণ হারে ‘স্টোর রেন্ট’ আরোপ করেছে। সিদ্ধান্তটি এমন সময় কার্যকর করা হয়েছে যখন দেশের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদউলফিতরের জন্য সরকারিভাবে ৯দিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিক কর্মচারীদেরকে এ সময়ে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছুটি প্রদান করা হয়ে থাকে। ফলে ঈদের ছুটির ১/২ দিন আগে থেকে আগত কন্টেনারসহ ছুটির মধ্যে বন্দরে আগত কন্টেনার নির্ধারিত ৪ দিনের মধ্যে খালাস করা সম্ভব ছিল না। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম গার্মেন্টস এঙেসরিজ এসোসিয়েশন এবং চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে আরোপিত ‘স্টোর রেন্ট’ বাতিলের জন্য নৌ পরিবহন উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করার পরও তা বাতিলের জন্য কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, আমরা মনে করছিএই ‘স্টোর রেন্ট’ বাতিল করা দরকার। কারণ আমদানিকারদের এমন অযৌক্তিক উচ্চহারে ‘স্টোর রেন্ট’ আরোপের ফলে শিল্পোৎপাদন বা অভ্যন্তরীণ ব্যবহার উভয় ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত বিশ্বের দেশগুলো তাদের শুল্কনীতি পরিবর্তনের কারণে আমাদের রপ্তানি খাতগুলো বৈদেশিক মুদ্রা আনয়নে তাদের রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখার জন্য যখন নানা উপায় খুঁজছে, ঠিক সে সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এরূপ হঠকারি সিদ্ধান্ত জাতীয় রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ ভোগ্য পণ্যের মূল্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনলাইনে টিকিট বিক্রির প্রথম দিনে ট্রেনের অর্ধেক টিকিট অবিক্রীত
পরবর্তী নিবন্ধসন্দ্বীপে বিএনপি দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত স্কুল ছাত্রের মৃত্যু