বিশ্ব ডিম দিবস আজ। প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠনে ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিনটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। অন্যদিকে বর্তমান বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে ডিমের দাম উর্ধ্বমুখী। প্রতি ডজন কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ১৪০ টাকা। অথচ গত বছরের সময়ে ডিমের ডজন ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। বছরের ব্যবধানে প্রতি ডজন ডিমের দাম বেড়েছে প্রায় ৫৫ টাকা। হঠাৎ করে ডিমের বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের অনেক মানুষই ডিম কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এ দিনটির গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ বাংলাদেশের মানুষ বছরে ডিম খায় গড়ে মাত্র ৪৫-৫০টি। অথচ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মতে সুস্থ্য থাকার জন্য জনপ্রতি ১০৪টি ডিম খাওয়া প্রয়োজন। মেধাবী এবং সুস্থ সবল জাতি গঠনে ডিমের বিকল্প নেই। ডিমের মধ্যে সরাসরি আমিষ রয়েছে। সাত ধরনের ভিটামিন রয়েছে। ডিমে ম্যাগনেশিয়াম, মিনারেল, আয়রন, ফসফরাস, জিংক রয়েছে। ডিম উপকারী কোলেস্টেরল বাড়ায়, অপকারী কোলেস্টেরল কমায়। ডিমে কৌলিন আছে যা ব্রেনসেল গঠনে সহায়তা করে। মাংশপেশী গঠনেও ভূমিকা রাখে। ডিম এমন উপকারি একটি খাবার যা নিয়মিত খেলে চোখে ছানি পড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, সারা বিশ্বেই সকালবেলার নাশতায় ডিম খাওয়ার কথা বলা হয়। ডিমের মধ্যে ভরপুর রয়েছে প্রোটিন। আর অন্যান্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের তুলনায় এর দামও কম। ডিম অনেক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি খাবার। ডিমের মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো এসিড। এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি৫, বি১২, বি৬, ডি, ই, কে, ফোলেট, ফসফরাস, ক্যালিয়াম ও জিংক। প্রতিটি ডিমের মধ্যে রয়েছে পাঁচ গ্রাম প্রোটিন। যদি কোনো গর্ভবতী মহিলা যদি প্রতিদিন দুটি করে ডিম খান তাহলে তার অনাগত শিশু হবে মেধাবী। কারণ ডিম রয়েছে কোলিন নামের একটি উপাদান। এটি শিশুর মস্তিস্কের বিকাশে সহায়তা করে। বেশিরভাগই খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ কোলিন রাখে না। ডিমে যেহেতু ভালো পরিমাণ কোলিন রয়েছে, তাই এটি ডিমের মধ্যে রয়েছে জিঙানথিন ও লুটেইন নামক অ্যান্টিঅঙিডেন্ট। এটি চোখের জন্য ভালো। এ ছাড়া এটি ছানি প্রতিরোধে সাহায্য করে। ডিমের মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ও ভালো চর্বি। অনেকে ভাবেন, সব চর্বিই খারাপ। তবে কথাটি সঠিক নয়। স্বাস্থ্যকর চর্বিও রয়েছে। এটি শরীরের জন্য ভালো। আবার ডিম মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. দেলোয়ার হোসেন দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা বিশ্ব ডিম দিবস পালন করতে যাচ্ছি। দিবসটি উপলক্ষে এবারের প্রতিপাদ্য ধরা হয়েছে ‘উন্নত জীবনের জন্য ডিম’। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ড. একেএম হুমায়ুন করিব। এছাড়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। এছাড়া বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, সিভাসুর ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, সিভাসুর ফুড সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলী বিশ্বাস।












