ফটিকছড়িতে মাইজভাণ্ডার দরবারের ওরশ ঘিরে বসেছে মাঘের মেলা। ভান্ডারি মুলা নামে খ্যাত জাপানি মুলা মেলার বিশেষ আকর্ষণ। দরবারের আসা ভক্তরা এসব মুলা কিনে নিয়ে যায়। তাই মেলায় এগুলোর কদর সবচেয়ে বেশি। নাজিরহাট থেকে শুরু করে মাইজভাণ্ডার দরবার এলাকা পর্যন্ত মেলায় মুলা বিক্রি চোখে পড়ার মত। একেকটি মুলা দুই–তিন হাত পর্যন্ত লম্বা হয়। আর ওজন হয় ৮/১৫ কেজি। প্রতিটি মুলা ১০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আজ শুক্রবার হযরত গাউছুল আজম সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারীর (ক.) বার্ষিক ওরশ শরীফকে কেন্দ্র করে ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার এলাকাজুড়ে বসেছে গ্রামীণ বা লোকজ পণ্যের মেলা। এটি ‘মাঘের মেলা’ হিসেবে পরিচিত।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওরশের আগের দিনেই মুলা নিয়ে আসছে প্রান্তিক চাষিরা। প্রতিবছরের তুলনায় এবার মুলা চাষ বেশি হয়েছে। ফলে মেলায় মুলা চোখে পড়ার মত। এটি মেলার বিশেষ আকর্ষণ।
সুয়াবিল, খিরাম ও কাঞ্চন নগর থেকে চাষীরা তাদের উৎপাদিত বড় আকারের মুলা (স্থানীয় ভাষায় জাপানি মুলা বা ভাণ্ডারী মুলা) মেলায় বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন। কারণ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ভক্তদের মাঝে এ অঞ্চলের মুলার আলাদা কদর রয়েছে। খ্যাতি ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। ফারুক নামে এক ভক্ত বলেন, ‘প্রতিবছর ওরশ শরীফে আসলে মুলা নিয়ে যাই। মুলাগুলো খেতে অনেক ভালো। এতবড় মুলা আর কোথাও পাওয়া যায়না।’ সাজ্জাদুল আলম নামের আরেকজন বলেন, ‘মাইজভাণ্ডার শরীফের মুলা হিসেবে প্রতিবছর ওরশে আসলে নিয়ে যাই। এ মুলা নিয়ত করে আমরা খাই।’ মুলা বিক্রেতা মো: সোহেল বলেন, ‘আমরা সারাবছর আশায় থাকি এই মাঘের মেলার জন্য। কারণ মেলায় এ মুলা ভালো বিক্রি হয়। সুয়াবিল এলাকায় আমার মত এত বেশি মুলাচাষ আর কেউই করেনা।’
এদিকে ফটিকছড়িতে এ বছর প্রায় ৬’শ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ করা হয়েছে। তবে গতবছরের তুলনায় তেমন ফলন না হলেও চাষী বেড়েছে। বড় বড় আকৃতির মুলার বেশ কদর রয়েছে ওরশ শরীফে আসা ভক্তদের কাছে। ১০ মাঘের ওরশ শরীফে বিক্রির জন্য আশায় থাকেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘এখানকার চরের মাটি খুবই উর্বর এবং এতে উৎপাদিত ফসল অত্যন্ত পুষ্টিকর। চলতি বছর জাপানি মুলার ভাল ফলন হয়েছে।’