দক্ষিণ চট্টগ্রাম পাল্টে যাচ্ছে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কারণে। টানেলটি চালু হলে অর্থনীতি এমনকী পর্যটনে যোগ হবে নতুন মাত্রা। বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পদ্মা সেতু যেভাবে ভূমিকা রেখেছে, চট্টগ্রামে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল সেভাবেই ভূমিকা রাখবে। ইকোনমিক জোনসহ শিল্প কারখানায় দীর্ঘদিনে অবহেলিত জনপদ দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলটি সমৃদ্ধ হয়ে চীনের সাংহাইয়ের মতো বদলে যাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থায় আসবে আমূল পরিবর্তন। এছাড়াও তৈরি হবে নতুন নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনা।
‘সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ কনসেপ্টকে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ করেছেন। চট্টগ্রামের মতো আরেকটি সিটি যাতে দক্ষিণ চট্টগ্রামে গড়ে তোলা সম্ভব হয় সেজন্য এ টানেল নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোকে সিটিতে রূপান্তর করা এবং সেখানে আবাসন থেকে শুরু করে শিল্পায়নের মাধ্যমে নতুন একটি শহরের রূপরেখা নির্মাণের জন্য এ টানেল তৈরি করা হয়েছে। এ শহরের সঙ্গে কক্সবাজারসহ মাতারবাড়ি বন্দরের সংযোগ তৈরি হবে। এছাড়া টানেলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম–ঢাকা মহাসড়ক আট লেনের কাজ শুরু হবে বলে জানতে পেরেছি।
টানেল চীনের সাংহাইয়ের আদলে ওয়ান সিটি টু টাউন মডেল আনোয়ারা ও কর্ণফুলিকে উপশহর করে গড়ে তোলার সম্ভাবনার সব দুয়ার খুলে দিয়েছে। সংযোগ সড়কের দু’পাশে গড়ে উঠছে ছোট–বড় শিল্প–কারখানা। হু হু করে আশপাশের জায়গার দাম বেড়ে গেছে চার পাঁচগুণের বেশি। সৃষ্টি হচ্ছে বহু কর্মসংস্থান। সেই সঙ্গে মানুষের জীবনযাত্রার মানও পরিবর্তন হচ্ছে। তবে চট্টগ্রাম মহানগরী অংশে নতুন করে পরিকল্পনা করা সম্ভব কম হলেও আনোয়ারা অংশকে নতুন শহর হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সেখানে এখন থেকে নগরায়ণের পরিকল্পনা করতে হবে। কেউ চাইলে যেখানে সেখানে যাতে স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে।
সেখানে এমনভাবে পরিকল্পনা করতে হবে যাতে আবাসন, শিল্পায়ন করা হবে সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে। এলাকাটি হবে নতুন চট্টগ্রামের অংশ, যার কারণে একটি দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন খুবই জরুরি। কিন্তু টানেল নির্মাণ করা হলেও কক্সবাজার কিংবা মাতারবাড়ির যে সংযোগের কথা বলা হয়েছে তাতে শুধু সড়কপথে আনোয়ারার উন্নয়ন করা হয়েছে। কিন্তু কক্সবাজারের সঙ্গে অন্যান্য এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো উন্নত করা হয়নি।
দীর্ঘ ৩.৪ কিলোমিটারের এ টানেলটি পার হওয়া যাবে মাত্র ৫ মিনিটে। শুধু ট্যানেল নয় আজ থেকে ৫০ বছর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্ন তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একে একে বাস্তবায়ন করছেন।