বঙ্গবন্ধু করে দিয়ে গেছেন, তা ধরে রাখতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে

| মঙ্গলবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪৩ পূর্বাহ্ণ

ভাষা আন্দোলন যে শুধু ভাষার জন্য ছিল না, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির জন্য যা করে দিয়ে গেছেন, তা ধরে রাখতে হবে। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য আছে। সেই সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আমাদের ধরে রাখতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
ভারত ভাগের পর নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানে বাঙালির ভাষার আঘাত আসার সেই ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা আঘাত হেনেছিল আমাদের সংস্কৃতির উপর, ভাষার উপর। এর প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। যখন পাকিস্তানিরা সিদ্ধান্ত নেয় যে উদুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হবে, তখনই তার প্রতিবাদ শুরু করেন। শুধু প্রতিবাদই নয়, ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে অন্যান্য দলকে সাথে নিয়ে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন। আর সেই সংগ্রাম করতে গিয়ে সেই পাকিস্তান আমলে, একটি রাষ্ট্র হওয়ার বছরও পার করেনি তখন, তিনি বারবার কারাবরণ করেন।
১৯৭১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার পর বঙ্গবন্ধু সেখানে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেখান থেকে উদ্ধৃত করে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৫২ সালের আন্দোলন কেবলমাত্র ভাষা আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এ আন্দোলন ছিল সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এ কথার মধ্য দিয়েই কিন্তু আমরা অন্তত এইটুকু শিক্ষা নিতে পারি যে এই ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষা আন্দোলন না। এই ভাষা আন্দোলন আমাদের সার্বিক বাঙালি জাতি হিসেবে অর্জনের আন্দোলন। এবং তিনি সেটা আমাদের করে দিয়ে গেছেন। এটাকে ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতার নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও শেখ হাসিনা তুলে ধরেন অনুষ্ঠানে।
তিনি বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এই স্বাধীনতাকে আমাদের অর্থবহ করতে হবে। এই স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।
করোনাভাইরাস মহামারীর থেকে দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষা এবং দেশের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তিনি অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসে, আমি বলব, আপনারা সবাই টিকা নেবেন। কিন্তু টিকা নিলেও স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, হাত ধুতে হবে। এটা কিন্তু মেনে চলতে হবে।
অনেক দেশ টিকা সংগ্রহ করতে না পারলেও বাংলাদেশ সরকার আগাম ব্যবস্থা নেওয়ায় বাংলাদেশ টিকা পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাথে সাথে সবাইকে সুরক্ষিত থাকার ব্যবস্থাও রাখতে হবে, এটা এই কারণে যে এটার কার্যকারিতা কতটুকু, তা গবেষণার পর্যায়েই আছে। তবুও অন্তত মানুষকে সুরক্ষা দিচ্ছে। নিজেকে আরো সুরক্ষিত করতে হবে, এই কারণে দ্বিতীয় ডোজও দিতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাতে বর্ণমালা, মুখে একুশের গান
পরবর্তী নিবন্ধঅবহেলা ও গাফেলতি হলে ছাড় নয় : মেয়র