স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে লেখা ‘নেতা ও পিতা’ বই প্রকাশের পর বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দুটি গোয়েন্দা সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছিল বলে দাবি করেছেন বইটির লেখক শারমিন আহমদ। তাজউদ্দীনকন্যার ভাষ্য, একদশক আগে ‘ঐতিহ্য’ থেকে বইটি প্রকাশের পর চট্টগ্রামে প্রকাশনা অনুষ্ঠান করতে গিয়ে তাকে গোয়েন্দাদের জেরার মুখে পড়তে হয়। গতকাল শনিবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০ দিনের ঐতিহ্য বই উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছিলেন শারমিন। খবর বিডিনিউজের।
তার কথায়, চট্টগ্রামের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের সদস্যরা এসেছিলেন। আমার সঙ্গে তখন কিন্তু ব্যারিস্টার আমীর–উল ইসলাম, চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীও ছিলেন। বইকে যে কত ভয় পেতে পারে, সত্যকে যে কত ভয় পেতে পারে! অনুষ্ঠানের আগেই আমাকে তারা জেরা করলেন।
শারমিনকে কী জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল– তাও উঠে এসেছে তার বক্তব্যে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সমর্থন নিয়ে মুজিবাহিনী করে, তারা যে মুক্তিযোদ্ধাদেরই আক্রমণ করছিল– এই ঘটনাও তো জানতে হবে। আমি সেটা কেন লিখেছি– তারা (গোয়েন্দারা) সেটা জানতে চান। তারা আমাকে প্রশ্ন করেছিল, আমি এটা কেন লিখলাম? আমাকে প্রশ্ন করেছিল, আপনি যে মুজিব বাহিনী সম্পর্কে এগুলো লিখেছেন, আপনি কী করে জানলেন? মুক্তিযুদ্ধের সময় তো আপনার বয়স কম ছিল।
গোয়েন্দাদের জেরার স্মৃতিচারণ করে শারমিন আহমদ বলেন, আমি তাদের বললাম, আপনি কি পলাশীর যুদ্ধ দেখেছেন? তখন তারা একটু হতবাক হয়ে গেলেন। বললাম, সেই সমসাময়িক যারা লিখেছেন–দেখেছেন, সেসসব তথ্য–উপাত্ত দিয়েই তো ইতিহাস গড়ে ওঠে। সেসব তো নিজের চোখে দেখতে হয় না; এখন আমরা আমেরিকার ইতিহাস পড়ছি। আমরা কী করে জানি। তখন উনি চুপ হয়ে গেলেন।