কাতার বিশ্বকাপে আরেকটা অঘটন ঘটেছে গতকাল রাতে। ‘ডি’ গ্রুপের শেষ খেলায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়ে দিয়েছে তিউনিসিয়া। তবে আগেই নক–আউট নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো ফ্রান্সের। গ্রুপের আরেক ম্যাচে ডেনমার্ককে ১–০ গোলে হারিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে নক–আউটে উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়াও। শেষ ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পেলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত ফ্রান্স, তবে তিউনিসিয়ার কাছে ১–০ গোলে হেরে সেই এক পয়েন্ট আর পাওয়া হয়নি ফ্রান্সের। এক পয়েন্ট না পেলেও ছয় পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ঠিকই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই নক–আউটে উঠেছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ফরাসিদের হারালেও গ্রুপে তৃতীয় হয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তিউনিসিয়াকে।
আগেই শেষ ষোলো নিশ্চিত হওয়ায় নিয়মিত একাদশের অনেককে বিশ্রাম দিয়েই তিউনিসিয়ার বিপক্ষে একাদশ সাজায় ফরাসি কোচ দিদিয়ের দ্যেশম। প্রায় দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি ফ্রান্স। গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে অধিনায়ক ওয়াহবি খাজরির গোলে ১–০ গোলে জয় পায় তিউনিসিয়া। ম্যাচের শুরু থেকেই বল দখলে এগিয়ে ছিলো ফ্রান্সই। তবে বাঁচা–মরার ম্যাচে মাত্র ৯ মিনিটেই ফ্রান্সের জালে বলও জড়ায় তিউনিসিয়া। তবে নাদের ঘান্দ্রির সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। এরপর থেকে বল দখলে প্রায় সমান সমান হলেও বলার মতো আক্রমণ করতে পারেনি কোনো দলই। বিরতি থেকে ফিরে গোলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে তিউনিসিয়া। অবশেষে ম্যাচের ৫৮ মিনিটের ফ্রান্সের জালে বল জড়িয়ে উল্লাসে মাতে তিউনিসিয়া। আইসা লাইদৌনির পাস থেকে ফ্রান্সের জালে বল জড়িয়ে তিউনিসিয়ার উল্লাসের উপলক্ষ্য এনে দেন অধিনায়ক ওয়াহবি খাজরি।
ম্যাচের শেষের দিকে গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ফ্রান্স। বেঞ্চে থাকা এমবাপ্পে, ডেম্বেলে, গ্রিজম্যানকে মাঠে নামিয়ে দেন দ্যেশম। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ম্যাচের যোগ করা সময়ের একবারে শেষ মুহুর্তে এসে তিউনিসিয়ার জালে গ্রিজম্যান বল জড়ালেও ভিএআর দেখে সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। শেষ পর্যন্ত আর কোন দলই প্রতিপক্ষের জালের ঠিকানা খুঁজে না পেলে ১–০ গোলের জয় নিয়ে তিউনিসিয়া আর হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। বাঁচা–মরার লড়াইয়ে ডেনমার্ককে এক গোলে হারিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। বুধবার রাতে খেলার প্রথমার্ধে ডেড লক ভাঙ্গতে ব্যর্থ হয় দু’দল। বিরতি থেকে ফিরে গোলের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাথু লেকির করা একমাত্র গোলে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমন–পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে দু’দল। বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করে তারা। তবে গোল পেতে ব্যর্থ হয়। এ অর্ধের শেষ দিকে আরও কিছু আক্রমণ চালায় ডেনমার্ক ও অস্ট্রেলিয়া। তবে গোল পেতে ব্যর্থ হলে গোলশূন্য থেকে বিরতিতে যায় দু‘দল। বিরতি থেকে ফিরে গোলের লক্ষ্যে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে দু’দল। তবে গোলের দেখা পায় না তারা। অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণকে বেশ ব্যস্ত রাখে ডেনমার্ক। মাঝে কিছু কাউন্টার অ্যাটাকে যায় অস্ট্রেলিয়া। তবে গুছিয়ে আক্রমণ পরিচালনা করে ডেনমার্ক। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে গোলের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ৬০ মিনিটে গোল পায় তারা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে ডেনমার্কের ডি বঙে ঢুকে যান ম্যাথু লেকি। সেখান থেকে প্লেসিং শটে বল জালে জড়ান তিনি। ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ডেনমার্ক। অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণে একাধিক আক্রমণ চালায় তারা। তবে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। অন্যদিকে এসময় কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের ৮৮ মিনিটে আবারও আক্রমণে ওঠে ডেনমার্ক। তবে নরগার্ডের নেওয়া শট চলে যায় পোস্টের বাইর দিয়ে। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে ১–০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া। ছয় পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোতে পা রাখে অস্ট্রেলিয়া। ফ্রান্সও ছয় পয়েন্ট পেয়েছে। তবে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় গ্রুপ রানার আপ হয়ে শেষ ষোলোতে পা রাখে অস্ট্রেলিয়া।