নিজেকে পরিচয় দেন পল্লী বিদ্যুতের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে, আসলে তিনি বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি। ফেসবুকে ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপন দিয়ে পাতেন ফাঁদ। তার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে নিজের সম্ভ্রম হারান এক তরুণী। অবশেষে তার করা মামলায় পতেঙ্গা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে ওই প্রতারককে। গত বুধবার রাতে মীরসরাই উপজেলায় বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম শিবলী সাদিক নাঈম (৪১)। তিনি নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের বমটেক গ্রামের মৃত একেএম হুমায়ূনের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, শিবলী ‘আসলাম চৌধুরী’ নামে ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিজেকে পল্লী বিদ্যুতের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রাম শহরে তার নিজস্ব বাড়ি ও গাড়ি আছে বলে উল্লেখ করে ‘পাত্রী চাই’ লিখে কয়েকবার স্ট্যাটাস দেন। সেখানে ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করেন নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার কাতিরহাট গ্রাম। সেই বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহী হন খাগড়াছড়ির জেলার মাটিরাঙার ২৭ বছর বয়সী প্রায় বাক প্রতিবন্ধী এক তরুণী। পিতৃহারা সেই তরুণী মায়ের সাথে থাকতেন পতেঙ্গা এলাকায়। মেসেঞ্জারে শিবলীর সাথে ওই তরুণীর যোগাযোগ হলে বিয়ের কথা বলে গত ১৩ মে পতেঙ্গার চরপাড়ায় একটি হোটেলে দেখা করে সে। সেখানে তাকে রাতভর আটকে রেখে কয়েকবার ধর্ষণ করে পরদিন সকালে মোটরসাইকেলে ফৌজদারহাটে আউটার রিং রোডের মুখে নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে নামিয়ে দ্রুতবেগে মোটরসাইকেল নিয়ে শিবলী পালিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পতেঙ্গা থানার উপ–পরিদর্শক (এসআই) আশীষ কুমার দে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ১৬ মে ওই তরুণী পতেঙ্গা থানায় ‘আসলাম চৌধুরী’ নাম উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। হোটেলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আসামির চেহারা শনাক্ত করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান চিহ্নিত করে তাকে বুধবার রাতে শিল্পনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় ভুক্তভোগী তরুণীর কেড়ে নেওয়া মোবাইলও উদ্ধার করা হয়। এসআই আশীষ বলেন, গ্রেপ্তারের পর আমরা তার আসল পরিচয় জানতে পারি। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার নাম শিবলী সাদিক নাঈম। মিথ্যা পরিচয় দিয়ে মেয়েদের সঙ্গে প্রতারণার উদ্দেশে সে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল এবং পাত্রী চাই স্ট্যাটাস দিয়ে ফাঁদ পেতেছিল। তিনি আরও জানান, মীরসরাইয়ে একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজ রয়েছে শিবলীর। এর পাশাপাশি মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি হিসেবেও কাজ করে। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুরে।