বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগর আমীর আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, ফেসবুকে উস্কানী দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা ও উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা সফল হবেনা, তাদের অপচেষ্টা দাফন হয়ে গেছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাতে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলার বিভিন্ন পুজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে জেএম সেন হলের পূজামন্ডপের ঘটনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় তিনি আরও বলেন, জেএম সেন হলের পূজামন্ডপের ঘটনা উদ্দেশ্যপ্রনোদিত নয়। পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল বাবু সাংস্কৃতিক দলের শিল্পীদের দাওয়াত দিয়েছেন, সেই দাওয়াতে শিল্পীরা জেএম সেন হলে গিয়েছেন, যাওয়ার পর জেএম সেন হল পূজামন্ডপের সভাপতি, সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারি যৌথভাবে শিল্পীদের গান পরিবেশনের অনুরোধ করেছেন। শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেছেন এবং একটি গানে ইসলামের কথা থাকায় সেটিকে নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিশৃঙ্খলা পূজামণ্ডপে যাঁরা ছিলো তাঁরা করে নাই, পূজা উদযাপন পরিষদের কেউ করে নাই, তাঁরা উপভোগ করেছে এবং বিনোদিত হয়েছে। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে সারাদেশে এটা নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে, এরা কারা সেটা আপনারা সবাই জানেন। আমরা ১৮ বছর সহ্য করেছি কিন্তু যাঁরা আধাঘন্টা সহ্য করতে না পেরে নিজের মাতৃভূমি ত্যাগ করে পলায়ন করেছেন তাদের মধ্য থেকে উস্কানী দিয়ে ফেসবুকে এটা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি ও আমার দলের ৪জন নেতা, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সারারাত কাজ করেছি। জেএম সেন হলের এই বিষয় নিয়ে হিন্দু ধর্মের মা-বোনেরা, যুবক, বৃদ্ধ, পূজামণ্ডপের ভক্তবৃন্দ কেউই কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাননি, কিন্তু ফেসবুকে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। আমি নগরীর কৈবল্যধাম পূজা মন্ডপে বলেছি যদি দোষী হয় তদন্তের মাধ্যমে তাঁদের বিচার হবে, কিন্তু এটাকে পুঁজি করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা যাঁরা করছেন তাঁরা সফল হবেননা তাদের অপচেষ্টা দাফন হয়ে গেছে।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব সনাতনী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব, অত্যন্ত ঝাঁকজমক ভাবে এই উৎসব পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, আমাদের মধ্যে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে একই সাথে বসবাস করছি। এদেশে কোন সনাতন ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠী সংখ্যালঘু নয়, আমরা হিন্দু-মুসলিম সকলেই ভাই ভাই, আমরা সবাই বাংলাদেশী।আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়তে কাজ করবো।
পূজামন্ডপ পরিদর্শনকালে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ, জামায়াতে ইসলামী আমিরাবাদ ইউনিয়ন শাখার সাবেক সভাপতি মাস্টার মোবারক আলী, জামায়াত নেতা চৌধুরী মোহাম্মদ সালেহ, মোহাম্মদ আরমান উদ্দিনসহ সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্র শিবির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পুজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের সাথে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং পরিদর্শন বইতে সাক্ষর করেন।