ফেরিতে একের পর এক ধাক্কা, বাল্কহেড জব্দ

চান্দগাঁও এবং বোয়ালখালী থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ২

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৪ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

গত ১০ দিনে কর্ণফুলীতে বেপরোয়া গতিতে চলাচলরত বালুবাহী বাল্কহেড কালুরঘাট ফেরিকে তিন দফা ধাক্কা দিয়েছে। সর্বশেষ ধাক্কার ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার বিকেল ৫টায়। এসময় যাত্রীসহ ফেরি বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেও ফেরির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছে ফেরিতে পারাপাররত গাড়িসহ শত শত লোকজন। এ ব্যাপারে চান্দগাঁও ও বোয়ালখালী থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এরইমধ্যে ধাক্কা দেয়া বাল্কহেডের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, এর আগে রাতের বেলা আরো দুইবার ফেরিকে ধাক্কা দেয়ার ঘটনা ঘটেছিল। সর্বশেষ বুধবারের ধাক্কার ঘটনায় ফেরির কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের এক সহকারী প্রকৌশলী মামলা করেছেন। আমরা ঐ বাল্কহেডের ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তারা হল রাহাত হোসেন এবং আহাদ হোসেন। এই ব্যাপারে আরো অভিযান চলবে, আরো গ্রেপ্তার হবে।

ফেরির যাত্রী অ্যাডভোকেট প্রবাল শীল ও অ্যাডভোকেট সেলিম চৌধুরী আজাদীকে বলেন, বুধবার বিকেল ৫টার দিকে গাড়িসহ লোকজন নিয়ে ফেরি পূর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে পার হওয়ার সময় বালুবাহী একটি বাল্কহেড বেপরোয়া গতিতে দক্ষিণ দিক থেকে এসে ফেরিকে জোরে ধাক্কা দেয়। এসময় ফেরিটি প্রায় কাত হয়ে যায়। এসময় ফেরি ভর্তি লোকজন এবং গাড়ি ছিল। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। অনেকেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। কিছু বুঝে উঠার আগেই বালুবাহী এই নৌযানের (বাল্কহেড) ধাক্কায় সবাই আতংকিত হয়ে উঠে। ফেরির যাত্রীদের কিছু না হলেও ফেরির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেপরোয়া গতিতে চলাচলরত অবৈধ এসব বাল্কহেডের সঙ্গে ফেরির সংর্ঘষে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন ফেরির চালকসহ স্থানীয় লোকজন।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে বোয়ালখালীচান্দগাঁও আসনের সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ আজাদীকে বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। এলাকার লোকজন আমাকে জানিয়েছেন। যা ঘটেছে সেটি তো বিপজ্জনক। এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছি। নৌপুলিশকেও বলেছি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।

খবর নিয়ে জানা গেছে, কালুরঘাট সেতুর উত্তরপূর্ব পাশের বোয়ালখালীর কধুরখীল অংশ থেকে শুরু করে এদিকে শাহ আমানত সেতু এবং অপরদিকে কালারপোল হয়ে ভেল্লাপাড়ার পরের অংশ পর্যন্ত অসংখ্য স্থান থেকে চট্টগ্রাম বন্দর এবং জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বালু উত্তোলনের অনুমোদ নিয়ে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালীরা। এসব বালু পরিবহন করা হচ্ছে অবৈধ বাল্কহেড দিয়ে। এগুলোর চলাচলের কোনো অনুমোদন নেই। এরকম ২ শতাধিকেরও বেশি বাল্কহেড কর্ণফুলী হয়ে কালুরঘাট সেতুর উভয় পাশে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। কালুরঘাট ফেরির সঙ্গে এ পর্যন্ত তিনবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে যে কোনো সময় আরো বড় ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানির আশংকা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেড় মাস না যেতেই ফের অকেজো সিটি স্ক্যান মেশিন
পরবর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনা-শি জিনপিং দ্বিপাক্ষিক বৈঠক