হাটহাজারী তাণ্ডবের দুটি মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনাইদ বাবুনগরীর ব্যক্তিগত সহকারী ইনামুল হাসান ফারুকীকে ফের ৯ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদা ইয়াসমিনের আদালত শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতের প্রসিকিউশন শাখার একটি সূত্র আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সূত্রটি জানায়, হাটহাজারী তাণ্ডবের একটি মামলায় বুধবার দুপুরে ৪ দিনের রিমান্ড শেষে ফারুকীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে এ মামলাসহ অপর একটি সহিংসতার মামলায় ফের ১০ দিন করে মোট ২০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে একটি মামলায় ৪ দিন ও অপর মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত শনিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালত পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে ফারুকীর ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন।
গত শুক্রবার রাতে হাটহাজারী তাণ্ডব ও হেফাজতের সাবেক আমির আল্লামা আহমদ শফি হত্যা মামলায় ফতেয়াবাদের বড় দীঘির পাড় এলাকা থেকে ফারুকীকে গ্রেফতার করে র্যাব। জানা গেছে, হাটহাজারী উপজেলা হেফাজতের প্রচার সম্পাদক ফারুকী বাবুনগরীর পক্ষে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠাতেন।
গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফী। তিনি হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক ছিলেন। হেফাজতের এক পক্ষের দাবি, আল্লামা আহমদ শফীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর আহমদ শফীর শ্যালক মো. মইন উদ্দিন চট্টগ্রামের আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বাবুনগরীসহ ৪৩ জনকে আসামি করে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই।
অন্যদিকে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে ব্যাপক সহিংসতা চালায় হেফাজতের কর্মীরা। এ সময় হাটহাজারী থানার পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিহত হয় চারজন।
এসব ঘটনায় গত ৩০ মার্চ অজ্ঞাতনামা কয়েক হাজারজনকে আসামি করে মোট ৬টি মামলা দায়ের হয়। পরবর্তীতে গত ২২ এপ্রিল হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও বিএনপি নেতা মীর হেলালকে আসামি করে তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। এ পর্যন্ত দায়ের হওয়া এসব মামলায় হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রেফতার হন জামায়েত নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীও।