বাংলাদেশে ফুসফুসের প্রধান অসুখ যক্ষ্মা। এছাড়া বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুসের নানা রোগে অনেকেই আক্রান্ত হন। আর এখন তার সাথে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৮ সালের হেলথ বুলেটিন অনুযায়ী, দেশে অসংক্রামক ব্যাধিতে যাদের মৃত্যু হয় তার ১০% শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত কারণে। এছাড়া শিশু মৃত্যুর যে ১০টি প্রধান কারণ রয়েছে, তার মধ্যে দুই নম্বরে রয়েছে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্টজনিত রোগে। বাংলাদেশ লাঙ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ডা. আসিফ মুজতবা মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে ফুসফুসের সবচেয়ে প্রধান রোগ হলো যক্ষ্মা। এছাড়া হাঁপানি, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিস এবং শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণও অনেক বেশি। বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুসের সমস্যায় অনেকেই আক্রান্ত হন। এখন তার সাথে যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাস। খবর বিবিসি বাংলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে যক্ষ্মার প্রবণতা বেশি হওয়ার কারণ ঘনবসতি। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো পরিচ্ছন্নতার ধারণার অভাব। এছাড়া শহরে বায়ুর মান খারাপ। ইটভাটার চিমনি শুধু শহরে নয়, গ্রামেও দূষণ তৈরি করে। সরাসরি ধূমপান না করলেও ধূমপায়ীদের আশপাশে যারা থাকেন তাদেরও অনেক ক্ষতি হয়। মেয়েরাও আগের থেকে বেশি ধূমপান করছেন। দেশে চার কোটির বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। গ্রামে কাঠের চুলায় রান্না হয়। তার ধোঁয়া ফুসফুসের জন্য ভয়ঙ্কর ক্ষতিকর। এছাড়া রয়েছে মশার কয়েলের ধোঁয়া।
এদিকে করোনার আক্রমণের প্রধান লক্ষবস্তু ফুসফুস। শ্বাসতন্ত্র মানুষের শরীরে তার প্রবেশ পথ এবং করোনা ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে যায়।
ফুসফুস সুস্থ রাখার উপায় : ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে বেশি দরকার নির্মল বায়ু। ফুসফুস সুস্থ রাখতে ধূমপান দ্রুত ত্যাগ করা, সুষম খাদ্য গ্রহণ করা, শাকসবজি, ফল ও মাছ বিশেষ করে টক জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। লেবু, কমলা, মাল্টা, বাতাবিলেবু, আমড়া, বরই ধরনের টক জাতীয় ফল ফুসফুসের জন্য উপকারী। এছাড়া ফুসফুসে প্রতিনিয়ত যে ক্ষয় হয় সেজন্য ভিটামিন–সি, ডি এবং জিংকযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরি।
ডা. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর বলেন, দুই হাত ধীরে ধীরে একসাথে মাথার উপরে তুলতে হবে। তোলার সময় শ্বাস নিতে হবে। দুই হাত প্রসারিত করে মাথার উপরে তুললে বক্ষপিঞ্জর প্রসারিত হয়। এতে বেশি বাতাস প্রবেশ করে। মাথার উপরে হাত কিছুক্ষণ রাখতে হবে। দশ সেকেন্ডের মতো শ্বাস ধরে রাখতে হবে। এরপর হাত নামাতে হবে। একই সাথে জোরের সাথে মুখ দিয়ে ধরে রাখা বাতাস ছেড়ে দিতে হবে। এই ব্যায়াম সকাল–বিকাল ১৫ মিনিট করা উচিত। একসঙ্গে এতক্ষণ না পারলে সারা দিনে ২৫ থেকে ৩০ বার এই ব্যায়াম করা যেতে পারে।