ফুল বিক্রিতে মেলেনি কাঙ্ক্ষিত সাড়া

বর্ষবরণে প্রশাসনের কড়াকড়ি

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১ জানুয়ারি, ২০২২ at ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ

করোনা ভাইরাস প্রকোপের কারণে গেল বছরের মতো এবারও রয়েছে প্রশাসনের বিধিনিষেধ। ফলে এবারও নতুন বছরকে বরণের উৎসব ফিকে হতে যাচ্ছে সেটি বলা যায়। এরপরেও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ প্রিয়জনকে নতুন বছরের বিভিন্ন উপহার সামগ্রী শুভেচ্ছা জানান। তবে পহেলা বৈশাখে বাংলা নতুন বর্ষবরণ কিংবা পহেলা জানুয়ারি ইংরেজী নতুন বর্ষবরণে প্রিয়জনকে শুভেচ্ছা জানানোর অন্যতম প্রধান উপাদানই হচ্ছে ফুল। ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্ষবরণে প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে ফুলের বিক্রি আশাব্যাঞ্জক নয়। এছাড়া বছরের প্রথম শনিবার সরকারি অফিস আদালত বন্ধ। সেটিও ফুল বিক্রিতে প্রভাব পড়ছে বলে জানান তারা।
নগরীর চেরাগি পাহাড় এলাকার কয়েকজন ফুল ব্যবসায়ী জানান, প্রথাগত অনুষ্ঠানগুলো বাদ দিলে ফুলের ব্যবসা হয় মূলত উৎসব কেন্দ্রীক। গত বছরের মতো এবছরও করোনার কারণে উৎসব আয়োজনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই ফুল বিক্রিতে কাঙ্ক্ষিত সাড়া মিলছে না। গত বছর লোকসান দেয়ার পর আমরা আশা করেছিলাম, এ বছর হয়তো করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। এটি আর দীর্ঘায়িত হবে না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০২১ সালটাও শেষ হচ্ছে করোনাকে সঙ্গী করে।
ফুল বিক্রেতারা জানান, প্রতিটি উৎসবেই গোলাপের আলাদা একটি চাহিদা থাকে। এবার গোলাপের মধ্যে রয়েছে লাল, সাদা, অরেঞ্জ, হলুদ রঙের গোলাপ। এসব ফুলের বেশির ভাগই আসে চীন থেকে। বর্তমানে প্রতিটি দেশি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ থেকে টাকা দরে। তবে চীনা গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১৪০ টাকায়। এছাড়া প্রতিটি গাঁদা অর্কিড ৬০ থেকে ৭০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক ৮ থেকে ১০ টাকা, ফুলের লহর ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং মাথার রিং ১৫০-২০০ টাকা, চীনা লিলি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা স্টিক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, জারবেরা প্রতিটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, প্রতিটি দেশি গ্লাডিওলাস ২০ থেকে ৩০ টাকা, প্রতি বান্ডেল জিপসি ফুল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাঁজরা ফুল ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
ফুলের দোকানে আসা তরুণীরা জানান, ফুল এখন আর সৌখিনতার বস্তু নয়। ফুলের আদান-প্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক বিশ্বাস, প্রতিশ্রুতি, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এছাড়া নিজেকে সাজাতে ফুলের জুড়ি নেই। কানে দুল, গলায় মালা ও হাতে ফুলের বাহারি অলঙ্কার পরার পাশাপাশি চুলের এক পাশে তাজা ফুল ক্লিপ দিয়ে সাঁটিয়ে থাকেন তরুণীরা।
ফুল কিনতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফৌজিয়া সুলতানা বলেন, নতুন বছর উপলক্ষে ফুল কিনতে এসেছি। বাবা-মা, ভাই, বোনকে ফুল দিয়ে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাবো। ফুলের সহাচার্যে আসলে মন প্রফুল্ল হয়ে উঠে। প্রতিটি উৎসবে তাই আমি ফুল কিনতে ছুটে আসি। তবে ফুল বিক্রেতারা একটু বেশি দাম হাঁকাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম ফুল ব্যবসায়ী ও চাষি বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. কুতুব উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত বছর করোনার কারছে আমরা বাজার হারিয়েছি। এ বছরও বেচাবিক্রি অবস্থা তেমন ভালো নয়। এছাড়া নতুন বছরের প্রথম দিন শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়াতে একটু সমস্যা হয়ে গেছে। অনেকে অফিসে কলিগদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেন। এবার তা আর হচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআশানুরূপ পর্যটক নেই কক্সবাজারে
পরবর্তী নিবন্ধকোভিড বিধিনিষেধের বিশ্বে আরেকটি বর্ষবরণ