চন্দনাইশে ফুটবল খেলতে গিয়ে আহত হওয়ার তিনদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম মোহাম্মদ সাকিব (১৯)। গত ৫ আগস্ট বিকেলে উপজেলার বরমা ইউনিয়নের বরমা স্কুল মাঠে ফুটবল খেলার সময় বিপক্ষ দলের অপর এক খেলোয়াড়ের সাথে ধাক্কা লেগে তলপেটে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় সাকিব। এরপর তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়ে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অপারেশন করার পর আইসিইউতে থাকা অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু হয় তার।
মারা যাওয়া সাকিবের পিতা মোহাম্মদ হোসেন জানান, কলেজ ছুটি থাকায় সাকিব গ্রামে চলে আসে। গত ৫ আগস্ট রোববার বিকেলে বরমা স্কুল মাঠে গ্রামের অপর ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলছিল সাকিব। খেলায় সাকিব দৌড়ে যাওয়ার সময় তার তলপেটে অপর এক খেলোয়াড়ের হাঁটুর সাথে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে যায়। এসময় তার বন্ধুরা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তলপেটে তার ব্যথা বেড়ে গেলে তাকে চন্দনাইশ হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে এক্সরে করে ইনজেকশন পুষ করে এবং ওষুধপত্র লিখে দেন। পরবর্তীতে আলট্রাসনোগ্রাফি করার পরাশর্ম দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে আসার আধা ঘণ্টার মধ্যেই সাকিবের তলপেটে ব্যথা আরো বেড়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে ওইদিন রাতেই বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা খারাপ দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক স্যালাইন ও ইনজেকশনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওইদিন রাতে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ভর্তি হাসপাতালে করা হয়। ব্যথার যন্ত্রণায় তাকে ঘুমের ওষুধ দেয়া হলেও ঘুম আসেনি তার। পরদিন সকাল ১০টায় ডাক্তার এসে পরীক্ষা–নিরীক্ষার ফলাফল দেখে তাকে অপারেশন দিতে হবে বলে জানান। পরে আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর তার প্রস্রাবের নলিতে আঘাত লেগেছে বলে জানান ডাক্তাররা। তাই তার একটি ছোট অপারেশন করতে হবে। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় তার অপারেশন শুরু হয়। ৭টার পর অপারেশন থিয়েটার থেকে একজন বের হয়ে জানান, রোগীর অপারেশন সাকসেস হলেও সে স্ট্রোক করেছে। পরবর্তীতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২৪ ঘণ্টা রাখার পর গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় ডাক্তাররা জানান তার ছেলে মারা গেছে। পরদিন বুধবার রাত দেড়টার দিকে সাকিবের লাশ তাদের বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে বরমা বাইনজুড়ি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার পিতা মোহাম্মদ হোসেনের দাবি ভুল চিকিৎসা এবং অপারেশন করে তার ছেলেকে মেরে ফেলা হয়েছে। কারণ ডাক্তাররা তাকে প্রথমে জানিয়েছিল তার প্রস্রাবের রাস্তায় সমস্যা দেখা গেছে, অপারেশন শেষে জানতে পারি তার খাদ্যনালিতে আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় তার খাদ্যনালি কেটে ফেলা হয়েছে। সাকিব চট্টগ্রামের এমইএস কলেজের ছাত্র ছিল। সে গতবার ইন্টার পরীক্ষা দিয়েছিল।