Humanity শব্দটি Latin (humanitas) শব্দ থেকে নেয়া হয়েছে। যার অর্থ দয়া যা মানব প্রকৃতি। তবে এটা মানুষ একে অপরের প্রতি যে ধরনের অনুভূতি ধারণ করে সেটিকেও বোঝায়। মানুষ হিসেবে ব্যথা বেদনা, দুঃখ–কষ্ট, আবেগ–অনুভূতি সর্বত্রই এক এবং অভিন্ন। পৃথিবীর সব মানুষের মাঝে এই অনুভূতি বিদ্যমান।
কিন্তু আপনি যখন মানবতার কথা বলবেন তখন সামগ্রিকভাবে সকল মানুষের কথা বলবেন। যখন মানুষ কোন খারাপ কাজ করে তখন তা মানুষ হিসেবে আপনার মানবতার প্রতি বিশ্বাসের অনুভূতিকে পরীক্ষা করে (অর্থাৎ এই খারাপ কাজ আপনার হৃদয়ে এক ধরনের বেদনার অনুভূতি জাগ্রত করে)। মানবতা একটা ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। এর কোনো আকার নেই।
আমাদের এখন প্রয়োজন আত্মশুদ্ধি। ইতিবাচক অনুভূতি যদি সদা জাগ্রত থাকে তাহলে সে বা তারা হতে পারে অধিক মানবিক। আরো পরিষ্কার করে বললে বলতে হয় ভালো বা মন্দ কাজ পৃথক করার অনুভূতি। যে অনুভূতি মানুষকে ভালোর দিকে ধাবিত করে আর মন্দ থেকে বিরত রাখে সেটিকে আমরা মানবতা বলতে পারি। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো যখন বিপর্যস্ত ও উপেক্ষিত হয় তখন মানবতার বিপর্যয় ঘটে। মানুষের পরিচয় মানুষ কেন? মানুষের পরিচয় মানুষ হওয়ার কারণ হলো মানুষের রয়েছে মনুষ্যত্ববোধ। এই মনুষ্যত্ববোধের কারণে মানুষ পশু থেকে উন্নত জীব। ভালো–মন্দ বিচার করার ক্ষমতা একমাত্র মানুুষকে দেয়া হয়েছে। আর এ জন্যই মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠজীব। এখন প্রশ্ন হচ্ছে মানুষকে এই ভালো মন্দ পৃথক করার যে জ্ঞান দেয়া হয়েছে তা কাজে লাগিয়ে কয়জনে সত্যিকারের মানুষ হতে পারছে? এই সংখ্যা নিতান্তই কম। বর্তমান সমাজের দিকে তাকালে আমাদের সামনে মানুষের মনুষ্যত্ববোধ ও বিবেকবোধের করুণ চিত্র ফুটে ওঠে। মানবতাবোধ আজ ভোঁতা হয়ে গেছে। এই কিছুদিন আগেও আমরা দেখেছি কেউ যদি কোনও গুরুজনদের সাথে বেয়াদবি করতো তাহলে তা সমাজের বড় ধরনের অন্যায় করার অপরাধ সমতুল্য মনে হতো। ছোট বড় বৃদ্ধ সবাই তার এই কাজটিকে নেগেটিভ ভাবে নিত। মানুষের এই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণে কোনও ব্যক্তি দ্বিতীয়বার আর এ ধরনের কাজ করার সাহস পেত না। বয়োবৃদ্ধরা তখন সবার শ্রদ্ধার পাত্র ছিল। সবার মাঝে একটা সম্প্রীতির ভাবছিল। বর্তমানে আমাদের সমাজ এক ভয়াবহ মানবতার সঙ্কট মোকাবেলা করছে। প্রত্যাশা করি ফিরে আসুক মানবতা।