ফার্নেস অয়েলের সংকট কাটছে বিপিসির

খালাস হচ্ছে ২২ হাজার টন

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৬ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ

হঠাৎ করে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে ফার্নেস অয়েলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দেশে জ্বালানি নিয়ে তৈরি হওয়া সংকট কাটতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ২২ হাজার টন ফার্নেস অয়েলের একটি জাহাজ খালাস শুরু হয়েছে। এতে করে বর্তমানে ফার্নেস অয়েলের মজুদ বেড়ে প্রায় ৩৭ হাজার টনে দাঁড়াবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)।
বিপিসি সূত্রে জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি মিলে দেশে বর্তমানে ফার্নেস অয়েল নির্ভর ৪৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি হচ্ছে বেসরকারি আইপিপি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্লান্ট) এবং ২০টি সরকারি। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে মাসে ৬০ হাজার টন ফার্নেস অয়েলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে ফার্নেস অয়েলের চাহিদা রয়েছে মাসে ১৫ হাজার টন। বেসরকারি আইপিপিগুলোতে মাসে চাহিদা থাকে ৪৫ হাজার টন। তবে আমদানি সুবিধা নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে ফার্নেস অয়েল আমদানি শুরু করে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। এরপর আইপিপিগুলোতে ফার্নেস অয়েল সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বিপিসি। আইপিপিগুলোকে ফার্নেস অয়েল আমদানির সুযোগ দেওয়া হলেও শর্ত ছিল ১০-১২ শতাংশ ফার্নেস অয়েল বিপিসি থেকে নিতে হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কম থাকলে চুক্তির শর্ত মোতাবেক চাহিদার ১০-২০ শতাংশ জ্বালানি বিপিসি থেকে নেওয়ার কথা থাকলেও নিত না। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে গেলে আইপিপিগুলো সেই শর্ত কাজে লাগিয়ে বিপিসি থেকে ফার্নেস অয়েল নেওয়া শুরু করে। গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চার মাসে আইপিপিগুলোর জন্য ২ লক্ষ ৮৬ হাজার টন ফার্নেস অয়েল সরবরাহের চাহিদা দেয় পিডিবি। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে ৯১ হাজার ৮শ মেট্রিক টন, অক্টোবরে ১ লক্ষ ১ হাজার মেট্রিক টন, নভেম্বরে ৫৭ হাজার ৬শ মেট্রিক টন এবং ডিসেম্বর মাসে ৩৫ হাজার ৪শ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েলের চাহিদা দেওয়া হয়।
এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বাড়তি থাকায় এবং তাৎক্ষণিক চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ দিতে সরবরাহকারীরা অপারগতা প্রকাশ করায় সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক রাখা নিয়ে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ে বিপিসি। তবে সংকট সামলাতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। নতুন করে ফার্নেস অয়েল আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় বিপিসি।
জানা গেছে, ১৬ সেপ্টেম্বর সরকারি-বেসরকারি বিদুৎকেন্দ্রের ব্যবহারের জন্য ৮০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল আমদানির অনুমোদন দেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এর মধ্যে অক্টোবরে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল কোটেশনের মাধ্যমে আমদানির উদ্যোগ নেয় বিপিসি। তারই অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুর থেকে ২১ হাজার ৯শ টনের প্রথম চালানের ফার্নেস অয়েলবাহী জাহাজ ‘এমটি মার্স কারা’ ৩ অক্টোবর চট্টগ্রামে আসে। ওইদিন থেকে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ডলফিন জেটিতে (ডিওজে-৫) খালাস শুরু হয়। ৫ অক্টোবর রাতের মধ্যেই খালাস শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বিপিসির কর্মকর্তারা।
বিপিসির উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) মো. জাহিদ হোসাইন আজাদীকে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হঠাৎ করে ফার্নেস অয়েলের চাহিদা দেওয়ার কারণে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এতে সরবরাহে কোনো সমস্যা না হলেও মজুদ কিছুটা কমেছে। এখন ২২ হাজার টনের একটি কার্গো এসেছে। এটি খালাস হলে মজুদ ৩৭ হাজার টনে দাঁড়াবে। এ মাসে আরও একটি কার্গো আসবে। এতে ফার্নেস অয়েল সরবরাহে স্বাভাবিকতা চলে আসবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনিয়মে জড়িতরা অবসরে গেলেও শাস্তি : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধআশিরের খুদে বিমান উড়ল আকাশে (ভিডিও দেখুন)