টি–টোয়েন্টি বিশ্বককাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচটি খেলতে নামতে আর পাঁচ দিন বাকি। এরই মধ্যে দলটি নিয়ে হতাশার যেন শেষ নেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের। তার অবশ্য সুস্পষ্ট কারণও আছে। বিশ্বকাপের ভেন্যুতে চার ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে টাইগাররা। আর এই চার ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সবচাইতে বাজে পারফরমার সৌম্য সরকার। দলে তার জায়গা নিয়ে যখন চারদিকে সমালোচনার ঝড় বইছে ঠিক তখনই প্রত্যাশার বেলুন উড়িয়ে দিলেন এই ওপেনার। বিশ্বকাপে আসলে লক্ষ্যটা কি বাংলাদেশ দলের ? এমন প্রশ্নের জবাবে সৌম্য সরকার বলেন ‘কেউ যদি বলে সেমি–ফাইনাল. আমি বলব, না ফাইনাল খেলতেই যাব’। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে এভাবেই দৃপ্ত কণ্ঠে নিজের লক্ষ্য পরিষ্কার করলেন সৌম্য সরকার। তবে এটি পূরণে মাঠের পারফরম্যান্সই যে মূল বিষয়, সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনার। ওয়ানডে বিশ্বকাপে একবার করে সুপার এইট ও কোয়ার্টার–ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। টি–টোয়েন্টির বিশ্ব আসরেও ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে পরের ধাপে যায় টাইগাররা। কিন্তু এরপর থেকে শুধুই ব্যর্থতা। পরের সবগুলো বিশ্বকাপ খেলেও অর্জনের খাতা প্রায় ফাঁকা।
এবার যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে চলমান বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে তাই প্রত্যাশা নিয়ে বেশি মাতামাতি না করতেও অনুরোধ জানিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরে অবশ্য তিনিই বলেছেন, আশা অনেক উঁচুতে রেখেই টুর্নামেন্টটি খেলতে যাচ্ছেন তারা। সে লক্ষ্যে আগে প্রথম রাউন্ডের বাধা পার হওয়ার কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে অধিনায়কের মতো এত হিসেবে যেতে রাজি নন সৌম্য। বিসিবির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের আয়োজন ‘গ্রিন–রেড স্টোরিতে লক্ষ্য উঁচুতে রেখে শিরোপার স্বপ্নই দেখালেন দলের বাঁহাতি ওপেনার। তিনি বলেন আমি তো সবসময় উঁচুতে দেখি। স্বপ্ন বড় দেখি। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখি। এটা আমার ব্যক্তিগত চিন্তা। আমি সবসময় বড় স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি। কেউ যদি বলে আমরা সেমি–ফাইনাল খেলব। কিন্তু আমি বলব না ফাইনাল খেলতেই যাব। ফলের কথা তো পরে আসবে। মাঠের খেলার ওপর ফল নির্ভর করবে। তবে স্বপ্ন বড় দেখাটা গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছরের শুরুতে তিন সংস্করণেই জাতীয় দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পেয়েছেন শান্ত। এর আগে গত বছরই অবশ্য ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন কিছু ম্যাচে। ওয়ানডে ও টি–টোয়েন্টি মিলিয়ে শান্তর অধিনায়কত্বে এখন পর্যন্ত ১৭টি ম্যাচ খেলেছেন সৌম্য। মাঠে ও মাঠের বাইরে অধিনায়কত্ব পর্যবেক্ষণ করে অভিজ্ঞ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বললেন, বিশ্বকাপে ভালো কিছু উপহার দিতে পারেন শান্ত। তিনি বলেন শান্তর অধিনায়কত্বে আমরা শ্রীলঙ্কা সিরিজটা খেলেছিলাম। যেভাবে ওকে মাঠের মধ্যে দেখেছি, আমি ইমপ্রেসড। সে দলকে সবসময় একত্রিত রাখছে। আশা করি, বিশ্বকাপে সব কিছু একত্রিত করে একটা ভালো দল হিসেবে সবার সামনে আনতে পারবে। আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা।
আশা করি অধিনায়কত্বের মধ্য দিয়ে সে বাংলাদেশকে নতুন কিছু একটা উপহার দেবে। একইসঙ্গে বাস্তবতাও মাথায় রাখছেন সৌম্য। তাই তো সমর্থকদেরকে হার–জিতের মাঝেও আনন্দ খুঁজে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এই ওপেনার বলেণ খেলায় তো উত্থান–পতন থাকে। ভালো–খারাপ থাকে, হার–জিত থাকে। সব কিছু মিলিতভাবে সমর্থকরা তাদের দিক থেকে যেন উৎসব হিসেবে নেয়। আমরা তো ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব এবং এর ভেতর থেকেই সমর্থখরা যেন আনন্দটা খুঁজে নিতে পারে।