মো. কফিল উদ্দিন ১৯৮২ সালে ‘মালী’ পদে বন বিভাগের চাকরিতে যোগ দেন। ইতোমধ্যে তার বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হয়। দীর্ঘ ৩৯ বছর সুনাম ও দক্ষতার সাথে চাকরি করার পর অবসর নেন তিনি। ৩৯ বছর আগে কফিল উদ্দিন চাকরি শুরু করেছিলেন ‘মালী’ পদে। অবসরও নেন মালী পদে থেকে। দীর্ঘ এই সময়ে তার পদোন্নতি হয়নি। চাকরি শুরুর সময় তার মাসিক বেতন ছিল ২২৫ টাকা। অবসরের সময় মাসিক বেতন ছিল ১৭,৯২০ টাকা। উন্নতির মধ্যে বেতনটাই বেড়েছে। স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে কফিল উদ্দিনের সংসার। মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। এক ছেলে বিএ পাস। এক ছেলে মাদ্রাসায় চাকরি করছেন।
চাকরিতে যে পদেই কর্মজীবন শুরু করুন না কেন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় পর পদোন্নতি হওয়ার কথা। কিন্তু কফিল উদ্দীন ৩৯ বছরেও পদোন্নতি পাননি। শুধু তিনি নন, তার সাথে একই সময়ে একই পদে বন বিভাগে যারা চাকরি শুরু করেছিলেন তাদের কারোরই প্রমোশন হয়নি।
কফিল উদ্দিন বলেন, চাকরির শেষ বছর ২০২১ সালে তার প্রমোশন হওয়ার কথা ছিল। প্রমোশন পেলে তিনি হতেন ফরেস্ট গার্ড। আত্মীয়-স্বজন ও সন্তানদের বলেছিলেন, এবার একটা প্রমোশন হবে। কিন্তু প্রমোশন আর হয়নি। তাকে জানানো হয়েছিল বন বিভাগে মালী পদ থেকে কারো প্রমোশন হয় না। তবে ‘মালী’ পদে থাকলেও চাকরির শেষ তিন মাস তিনি ফরেস্ট গার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সমপ্রতি কফিল উদ্দীনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বলিষ্ঠ শরীর ও চাঙ্গা মনোভাব নিয়ে চাকরি শুরু করেছিলাম। আজ লাঠি ছাড়া হাঁটতে কষ্ট হয়। চোখেও ঝাপসা দেখি। চাকরি জীবনে কখনো অপরাধ করিনি। দায়িত্ব পালন নিয়ে আমার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছেও কোনো অভিযোগ নেই। তবে শেষ বয়সে ফরেস্ট গার্ড হিসেবে একটি প্রমোশন পেলে পরিবারের সবাই খুশি হতো বলে জানান তিনি।