ফতেয়াবাদে নতুন উপশহর গড়ে তোলার কাজ শুরু

দুই হাজার দুইশ’ আবাসিক প্লট করবে সিডিএ ব্যয় তিন হাজার কোটি টাকা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২০ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

অবশেষে ফতেয়াবাদে নতুন উপশহর গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে সিডিএ। তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুই হাজার দুইশ’ আবাসিক প্লটের বিশাল একটি আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রায় ৩ হাজার একর জায়গায় বর্তমানে যেসব ভিটেমাটি আছে সেগুলোকে কোন ধরনের ডিস্ট্রার্ব না করেই নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হবে। কাঠা প্রতি দশ লাখ টাকায় তিন থেকে পাঁচ কাঠা পর্যন্ত আয়তনের বিভিন্ন সাইজের প্লট দেয়া হবে। এটি আগামী সপ্তাহে নতুন প্রকল্প প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটিতে উত্থাপন করা হবে।
সূত্র জানায়, নগরীর আবাসন সংকট নিরসনের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় সিডিএ আবাসিক এলাকা গড়ে তুলেছে। কিন্তু গত এক যুগেরও বেশি সময় সিডিএ কোন আবাসিক এলাকা গড়ে তোলেনি। এরমধ্যে অনন্যা আবাসিক এলাকার সম্প্রসারিত অংশ উন্নয়ন করে অনন্যা-২ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হলেও পরবর্তীতে তা আর হয়নি। ফতেয়াবাদ এলাকায় ‘ ডেভেলপমেন্ট অব ফতেয়াবাদ নিউ টাউন ’ আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল ২০০৭সালে। ৪ হাজার ৭শ’ একর জায়গার ওপর ‘ ডেভেলপমেন্ট অব ফতেয়াবাদ নিউ টাউন ইন চট্টগ্রাম ’ নামে আধুনিক উপশহর গড়ে তোলার প্রাথমিক কিছু কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও শেষতক প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে প্রণীত মাস্টার প্ল্যানে ওই প্রকল্পটির এলাকা ২ হাজার ৩শ’ একর বাড়িয়ে ৭ হাজার একরে উন্নীত করা হয়। ২০১৩ সালের জুলাইয়ে শুরু করে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনেও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়নি। এতে এলাকার কয়েক হাজার মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠে। প্রবাসীসহ স্থানীয় অসংখ্য মানুষ নিজেদের বাড়ি তৈরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। তারা কোনভাবেই সিডিএ থেকে এলাকায় বাড়ি করার প্ল্যান পাচ্ছিল না। এ নিয়ে স্থানীয়রা অনেক আন্দোলন করেছে। সিডিএকে ওই প্রকল্প বাতিল করে এলাকার মানুষ যাতে নিজের জায়গায় নিজেরা বাড়িঘর করতে পারে তার প্ল্যান দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছিলেন।
অবশেষে সিডিএ ফতেয়াবাদ উপশহর নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকল্প এলাকা কমিয়ে করা হয়েছে দুই হাজার নয়শ’ একর। আবার এলাকার কোন ভিটে বাড়ি হুকুমদখল না করারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইতোমধ্যে সার্ভে সম্পন্ন করা হয়েছে। যে সব বসতভিটে প্রকল্প এলাকায় রয়েছে সেগুলোকে ওভাবে রেখেই প্রকল্পের ডিজাইন করা হচ্ছে। এসব বসতভিটায় বাড়িঘর নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্ল্যান অনুমোদনেরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্থানীয় বসতভিটে বাদ দিয়ে ২৯শ’ একর জায়গায় ২২শ’ আবাসিক প্লট, খেলার মাঠ, বাণিজ্যিক স্থাপনার জন্য জায়গা, মসজিদ, কবরস্থান, পুলিশ বঙ, লেকসহ নানা অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে।
প্রকল্প এলাকায় ৩ কাঠা থেকে ৫ কাঠা সাইজের প্লট বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতি কাঠার মূল্য দশ লাখ টাকা নির্ধারিত হতে পারে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক হিসেব নিকেশ সম্পন্ন করে প্রকল্প সারপত্র চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এটি মহানগরীতে নতুন প্রকল্প প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটিতে উত্থাপন করা হবে। এই কমিটির অনুমোদনের পর প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে গতকাল সিডিএ’র চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস বলেন- ফতেয়াবাদে নতুন আবাসিক এলাকা গড়ে তোলার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, সিডিএ বহুদিন কোন আবাসিক এলাকা করেনি। আয়বর্ধক প্রকল্প করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা রয়েছে। তাই আমরা দুই হাজার দুইশ’ প্লটের একটি আবাসিক এলাকা গড়ে তুলছি। এতে শুধু সিডিএ নয়, এলাকাবাসীও লাভবান হবে। তিনি আরো বলেন, ওই এলাকায় সিডিএ’র প্ল্যান নিয়ে একটি সমস্যা ছিল। আমরা ওই সংকট সুরাহার ব্যাপারেও নীতিগত বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগৃহবধূর মৃত্যু, স্বামী আটক
পরবর্তী নিবন্ধলংকানদের জালে ১২ গোল, ফাইনালে বাংলাদেশ