সরকারি টিলা কেটে পাহাড়ি মাটি নিয়ে যাওয়া হয় আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে। এরপর সেই মাটি দিয়ে বাড়ি নির্মাণের জন্য করা হয় জায়গা ভরাট। বিএনপি নেতার রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে কাটা হয় এ টিলা। ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের বালুখালীতে ঘটে এ ঘটনা। গতকাল সোমবার পরিদর্শনে গিয়ে এর সত্যতা পায় পরিবেশ অধিদপ্তর। পরে টিলা কেটে সমতল করায় দুই বিএনপি নেতাসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিন বাদী হয়ে ভূজপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হচ্ছেন– শফিউল আজম চৌধুরী, মামুনুর রশীদ (প্রকাশ পোল্ট্রি মামুন), মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. শাহাদাত হোসেন (প্রকাশ ভাগিনা শাহাদাত) ও মিয়া সওদাগর। এর মধ্যে শফিউল আজম চৌধুরীকে দাঁতমারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মামুনুর রশীদকে সহ–দপ্তর সম্পাদক উল্লেখ করা হয় এজাহারে। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর সোয়া ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানার ২ নং দাঁতমারা ইউনিয়নের চামাঘোনা মনাইয়ার দোকান এলাকায় পূর্ব বালুখালী জামে মসজিদ সংলগ্ন আনুমানিক ও আশেপাশের এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়।
পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, আনুমানিক ৩৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট টিলা শ্রেণির ভূমির মাটি গড়ে ১০ ফুট খাড়াভাবে কোদাল দিয়ে কেটে সমতল স্থানে পরিণত করা হয়েছে। কর্তিত জমির পরিমাণ আনুমানিক ১ দশমিক ৫০ শতক।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শফিউল আজম চৌধুরীর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মামুনুর রশীদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে টিলাটি কাটা হয়। টিলাটি খাস খতিয়নভুক্ত হলে দখলে ছিল মো. সিরাজুল ইসলাম–এর। মাটি কেটে ছোট ডাম্প ট্রাকে করে মাটি পরিবহন করে নিয়ে যাওয়া হয় আড়াই থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে পশ্চিম বালুখালীতে। এ মাটি দিয়ে শাহাদাত হোসেন ও মিয়া সওদাঘর–এর বাড়ি নির্মাণের জন্য জায়গা ভরাট করা হয়। এর মধ্যে শাহাদাত এর বাড়ি ছিল নির্মাণাধীন। একইভাবে মিয়া সওদাগর এর বাড়ির পাশেও একটি নির্মাণাধীন বাড়ি দেখা যায়। এ দুই বাড়িতেই পাহাড়ের মাটি দিয়ে ভূমির উন্নয়ন করা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদী মো. আশরাফ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ব্যতিত নির্বিচারে পাহাড়–টিলা কর্তন করে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি করছেন বিবাদীরা। যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ধারা ৬ (খ) ও ১২ ধারা যা উক্ত আইনের ধারা ১৫ এর উপধারা ১ এ বর্ণিত টেবিলের ক্রমিক ৫ ও ১২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।












