ফজল-এ-খোদা: কবি ও গীতিকার

| মঙ্গলবার , ৪ জুলাই, ২০২৩ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ফজলখোদা (১৯৪১২০২১)। কবি, গীতিকার, ছড়াকার ও পত্রিকা সম্পাদক। ফজলখোদা ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ মার্চ পাবনার বেড়া থানার বনগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ফজলখোদা তৎকালীন পাকিস্তান বেতারের তালিকাভুক্ত গীতিকার হিসেবে ১৯৬৩ সাল থেকে কর্মজীবন শুরু করেন। পরের বছর তিনি পাকিস্তান টেলিভিশনেও তালিকাভুক্ত হন। ১৯৭১এ অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে তাঁর লেখা গণসংগীত ‘সংগ্রাম, সংগ্রাম, সংগ্রাম চলবে, দিন রাত অবিরাম’ গানটি তৎকালীন টেলিভিশন প্রচার করে। ফজলখোদার লেখা এবং মোহাম্মদ আবদুল জব্বারের সুরারোপ করা ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ গানটি ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে বিবিসির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাংলা গানের সেরা ২০ গানের তালিকায় ১২তম স্থান পায়। এছাড়াও তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘যে দেশেতে শাপলা শালুক ঝিলের জলে ভাসে’, ‘ভালোবাসার মূল্য কত আমি কিছু জানি না’, ‘কলসি কাঁধে ঘাটে যায় কোন রূপসী’, বাসন্তী রং শাড়ি পরে কোন রমণী চলে যায়’, আমি প্রদীপের মতো রাত জেগে জেগে’, ‘প্রেমের এক নাম জীবন’, ‘ভাবনা আমার আহত পাখির মতো, পথের ধুলোয় লুটোবে’, ‘বউ কথা কও পাখির ডাকে ঘুম ভাঙরে’, ‘খোকনমণি রাগ করে না’ ইত্যাদি। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার শিকার যখন, তখনো তিনি বেতারে কাজ করেন। বাংলাদেশ বেতার হয়ে গেল রেডিও বাংলাদেশ। সরকারি কর্মচারী হয়েও ফজলখোদা লিখলেন এক কাব্যিক প্রতিবাদ ‘এমন তো কথা ছিল না…’। বশীর আহমেদের সুর আর মোহাম্মদ আবদুল জব্বারের গাওয়া ফজলখোদার সেই গানটি ছিল ‘ভাবনা আমার আহত পাখির মতো/ পথের ধুলোয় লুটোবে/ সাত রঙে রাঙা স্বপ্নবিহঙ্গ/ সহসা পাখনা লুটোবে/ এমন তো কথা ছিল না’।

১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে রচিত এবং প্রচারিত এই গানটি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা ও গাওয়া প্রথম গান। তিনি শিশুদের জন্য লিখেছেন অসংখ্য ছড়া। পালন করেন শিশুসংগঠকের দায়িত্বও । শিশু কিশোর সংগঠন শাপলা শালুকের আসরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। সত্তর দশকে তিনি শিশু কিশোরদের মাসিক পত্রিকা ‘শাপলা শালুক’ সম্পাদনা করছেন। তার লেখা ১০টি ছড়াগ্রন্থ, ৫টির কবিতার গ্রন্থসহ তার মোট ৩৩টি বই প্রকাশিত হয়। ফজলখোদা ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধঅসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ হোক