প্লে-অফের পথে আরো একধাপ এগুলো চিটাগাং

হারের হ্যাটট্রিক পূরণ রংপুর রাইডার্সের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

টানা আট ম্যাচে জিতে একরকম উড়ছিল রংপুর রাইডার্স। কেউই যেন থামাতে পারছিল না নুরুল হাসান সোহানের দলকে। কিন্তু চট্টগ্রামে দুর্বল রাজশাহীর কাছে হেরে শুরু হয় ছন্দ পতন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরে আবার সেই রাজশাহীর সামনে রংপুর। এবারো ২ রানের হার। আর গতকাল চিটাগাং কিংসের কাছে হেরে হারের হ্যাটট্রিক পূরণ করল রংপুর। যদিও তারা আগেই প্লে অফ নিশ্চিত করেছে। তবে হারের বৃত্তে বন্দী হয়েই থাকল। গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্লে অফের পথে আরো একধাপ এগিয়ে গেল চিটাগাং কিংস। চিটাগাং কিংসের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোরিংএ বেশিদুর যেতে পারেনি রংপুর। ১৪৩ রানে আটকে রেখে চিটাগাং জিতে যায় ১৪ বল বাকি রেখে।

টসে হেরে ব্যাট করতে নামা রংপুর রাইডার্স ম্যাচের শুরুতেই বিপাকে পড়ে যায় । পাওয়ার প্লেতে দ্রুত রান তুলতে পারেনি তারা। উল্টো হারাতে হয় তিন উইকেট। চট্টগ্রামের একাদশে ফেরা বিনুরা ফার্নান্দোর মেডেন ওভার দিয়ে শুরু হয় ম্যাচ। শুরুর ওভারে রান নিতে না পারা স্টিভেন টেইলর পরের ওভারেই বোল্ড হয়ে যান শরিফুল ইসলামের বলে। ৭ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। তিনে নেমে প্রথম দুই বলেই বাউন্ডারিতে শুরু করা সাইফ হাসান এরপর আর রানই করতে পারেননি । ৮ বলে ৮ রান করে ফিরেন খালেদের বলে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে দৃষ্টিনন্দন এক ছক্কার পর রান আউট হয়ে যান সৌম্য সরকার ১৭ বলে ২৩ রান করে। পাওয়ার প্লেতে রংপুরের রান ছিল ৩ উইকেটে ৩৭। ইফতিখার আহমেদ ও নুরুল হাসান সোহান চেষ্টা করেন দলকে এগিয়ে নিতে। তবে রাহাতুল ফেরদৌসের ওভারে দুজন একটি চারে চার মারার পরও দুজনেরই পথচলা ছিল ধীরগতির। ১১ ওভার শেষে রংপুরের রান দাঁড়ায় মোটে ৬০। সেই বৃত্ত ছেড়ে আর বেরোতে পারেননি সোহান। খালেদকে উড়িয়ে মেরে সীমানায় ধরা পড়ে আউট হন ২১ বলে ৯ রান করে। তখন রংপুর তাকিয়ে ছিল ইফতিখারের ব্যাটের দিকে। আগের তিন ম্যাচ ব্যর্থ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ভরস জোগান দলকে। তাকে সঙ্গ দিতে নামা ইরফান শুক্কুর বিদায় নেন ১ রানেই। ৬৮ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে এগিয়ে নেন ইফতিখার ও শেখ মেহেদি হাসান। সোহানের বিদায়ের সময় ইফতিখারের রান ছিল ১৬ বলে ১৬। পরে শেষ দিকের দাবি মেটান তিনি প্রত্যাশিত ব্যাটিংয়ে। খালেদের টানা দুই বলে ছক্কা মেরে ফিফটি করেন ৩৯ বলে। শেষ ওভারেও শরিফুলকে চার ও ছক্কা মেরে শেষ করেন তিনি অপরাজিত থেকে। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৭ বলে করেন ৬৫। এবারের বিপিএলে তার প্রথম ফিফটি এটি। ৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে মেহেদি অপরাজিত থাকেন ২০ বলে ২২ রান করে। চিটাগাং এর পক্ষে ২টি উইকেট নেন খালেদ আহমেদ।

জবাবে ব্যাট করতে নামা চিটাগাং কিংসও শুরুটা ভাল করতে পারেনি। ১৩ রানে ভাঙ্গে তাদের উদ্বোধনী জুটি। এই লঙ্কান বাঁহাতি ৬ রানেই থেমে যান আকিফ জাভেদের বলে। গ্রাহাম ক্লার্ক তিনে নেমে দুই ওভারে দুটি বাউন্ডারির পর দারুণ এক পুল শটে ছক্কা মারেন আকিফকে। পাকিস্তান বাঁহাতি পেসারের জবাবটাও হয় দারুণ। গতিময় এক নিখুঁত ইয়র্কারে ইংলিশ ব্যাটসম্যানের স্টাম্প উপড়ে দেন তিনি। ১২ বলে ১৫ রান করেন তিনি। পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে হারিয়ে চিটাগং তোলে কেবল ২৯ রান। এরপর দলের হাল ধরেন পারভেজ হোসেন ইমন এবং অধিনায়ক মিঠুন। ইমন ধীরে চলো নীতি গ্রহন করলেও মোহাম্মদ মিঠুন অবশ্য চেষ্টা করেন আগ্রাসী হওয়ার। কিন্তু বেশিদুর যেতে পারেননি। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের তিনি আউট হন বল স্টাম্পে টেনে । ১৫ বলে ২০ রান করেন চিটাগাং অধিনায়ক। মিঠুনের বিদায়ের পর একটু সক্রিয় হয়ে ওঠেন পারভেজ। ব্যাটিংয়ের ধরন বদলেও শেষ পর্যন্ত ফিফটি করতে পারেননি পারভেজ। ৪৩ বলে ৪১ রান করে তিনি ফিরতি ক্যাচ দেন সাইফ উদ্দিনকে। ৩৪ বলে ৪৩ রানের এই জুটি চিটাগাংকে এগিয়ে নেয় জয়ের দিকে। শামীম হোসেনও পারেননি দলকে এগিয়ে নিতে। ফিরেছেন ৮ রান করে। তবে দলকে এগিয়ে নেন হায়দার আলি। দারুন ব্যাটিং করে দলকে জিতিয়ে তবেই ফিরেন এই পাকিস্তানী। ১৮ বলে একটি চার এবং ছয়টি ছক্কায় ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এই জয়ের ফলে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তিনে চিটাগাং কিংস। তবে গতকালের হারে প্রথমবারের মত দ্বিতীয় স্থানে নেমে এলো রংপুর। বরিশালের সাথে পয়েন্ট সমান হলেও রান রেটে এগিয়ে থাকায় বরিশাল এক নম্বরে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় ৩৫ বছর পর মাঠে গড়াচ্ছে শহীদ জিয়া স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট
পরবর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৪.০১ কোটি টাকা