এবার রমজানের শুরুতে নগরীতে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও যানজটের ভোগান্তি না থাকায় প্রথম রমজান স্বস্তিতে কেটেছে নগরবাসীর। সাধারণ মানুষ পুরো রমজান মাস পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নিশ্চয়তা চায়। সারা দিন রোজা রাখার পর কর্মব্যস্ততা সেরে ইফতারের আগ মুহূর্তে যানজটমুক্ত থেকে নির্বিঘ্নে বাসায় ফিরে পরিবার-পরিজনের সাথে ইফতার করতে চায়। গতকাল রোববার প্রথম রমজানের দিন ইফতারের আগ মুহূর্তে নগরীতে তেমন যানজট ছিল না। প্রথম রমজানে সাধারণ মানুষ ইফতারের আগে নির্বিঘ্নে বাসা-বাড়িতে গিয়ে পরিবার-পরিজনের সাথে স্বস্তিতে ইফতার করতে পেরেছেন। ছিল না পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংকট।
প্রতি বছর রমজান মাসে নগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে পিডিবি, ওয়াসাসহ সরকারি সেবা সংস্থাগুলো আগে থেকে বাড়তি প্রস্তুতি নেয়। এবারও রমজান মাসজুড়ে সারা দিন পানি সরবরাহ, সেহরি ও তারাবি নামাজের সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থার প্রকৌশলীরা। অন্যান্য বছরগুলোতে বিদ্যুৎ ও পানির কিছুটা সংকট থাকলেও এবার এখনো পর্যন্ত সংকট দেখা যায়নি। তবে শুষ্ক মৌসুমের কারণে হালদা ও কর্ণফুলীর উজানে লবণাক্ততা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির উৎপাদন কিছুটা কমে গেছে বলে জানান ওয়াসার সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। এর ফলে নগরীর কিছু কিছু এলাকায় পানির প্রেসার কম। তবে রেশনিং করে পানি সরবরাহ ঠিক রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার বিভিন্ন মডের প্রকৌশলীরা। প্রতি বছর রমজানে যানজটের দুর্ভোগে পড়েন রোজাদাররা। বিশেষ করে ইফতারের আগে বাড়ি ফেরার পথে অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়েন। এবার প্রথম দিনে যানজটের ভোগান্তি তেমন ছিল না। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ যানজট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।
পিডিবির প্রস্তুতি : পিডিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের পক্ষ থেকে রমজানে চট্টগ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে আগেভাগে প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিতরণ দক্ষিণাঞ্চল চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (উত্তর) শহীদুল ইসলাম মৃধা। তিনি আজাদীকে বলেন, রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বভাবিক রাখার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে। ইতোমধ্যে আমাদের সাব-স্টেশনগুলো সংস্কার করে পুরোপুরি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সঞ্চালন লাইনের দুই পাশে গাছের ডাল কাটা হয়েছে। প্রতিটি ডিভিশনে নির্বাহী প্রকৌশলীসহ অন্য প্রকৌশলীদের রোস্টার করে দেওয়া হয়েছে। আমরা যারা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছি, খুলশী গ্রিড সিস্টেম কন্ট্রোল থেকে মনিটরিং করব। সব মিলে রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে প্রতিটি ডিভিশনে প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে।
ওয়াসার প্রস্তুতি : চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল আমিন আজাদীকে বলেন, রমজানে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ওয়াসার পক্ষ থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমাদের ৪টি মডে ৪টি কন্টোল রুম চালু রয়েছে। মড-১ আগ্রাবাদ, মড-২ জুবিলী রোড, মড-৩ মেহেদীবাগ ও মড-৪ কালুরঘাট। এছাড়া ভিজিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে। পানি সরবরাহ যেন সার্বক্ষণিক চালু থাকে। পানির ভাউচার থাকবে। শুষ্ক মৌসুমে কর্ণফুলী ও হালদার পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন কিছুটা কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারপরও পবিত্র রমজানে নগরীতে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক থাকবে।