প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে যে প্রভাব পড়তে পারে

ট্রাম্পের ওপর হামলা

| সোমবার , ১৫ জুলাই, ২০২৪ at ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ

ডোনাল্ড ট্রাম্প গুলিতে আহত অবস্থায় উঠে দাঁড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত আকাশে ছুড়ছেন, তার কান থেকে রক্ত গালের পাশ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে আর সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা চারপাশ থেকে তাকে ঘিরে ধরে আছেনঅকল্পনীয় এস ছবি শুধু ইতিহাসই তৈরি করেনি, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চলমান ধারা পাল্টে দিতে পারে।

এই আতঙ্কজনক রাজনৈতিক সহিংসতার প্রভাব নির্বাচনী প্রচারে অনিবার্যভাবেই পড়বে। মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা সন্দেহভাজনকে ঘটনাস্থলেই গুলি করে মেরেছে। আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, এই হামলার ঘটনাকে হত্যাচেষ্টা বিবেচনা করে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। খবর বিডিনিউজের।

সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টদের ঘেরাওয়ের মধ্যে রক্তাক্ত মুখ নিয়ে ট্রাম্প মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তুলে ধরে আছেন, এমন একটি ছবি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প লিখেছেন, এই লড়াইটাই আমেরিকার দরকার।

এই গুলির ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টেলিভিশনে হাজির হয়ে বলেন, এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো জায়গা আমেরিকায় হবে না। তিনি তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং শনিবার রাতেই তার সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।

বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণা শিবির দ্রুততার সঙ্গে তাদের সব রাজনৈতিক বিবৃতি ও টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধ করে রাখে। এই সময়ে ট্রাম্পকে নিয়ে আক্রমণাত্মক কিছু বলা যে ঠিক হবে না, তাদের এসব পদক্ষেপে এই বিশ্বাস পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। এর বদলে তারা যা ঘটেছে তার নিন্দা করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে।

সব রাজনৈতিক শিবিরের রাজনীতিকরাই একযোগে বলছেন, গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন ও জিমি কার্টার দ্রুততার সঙ্গে এই সহিংসতার নিন্দা করেছেন আর জানাচ্ছেন, ট্রাম্প গুরুতরভাবে আহত না হওয়ায় তারা কতটা স্বস্তিবোধ করছেন। কিন্তু ইতোমধ্যে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ কিছু রাজনৈতিক সহযোগী ও সমর্থক এই সহিংসতার জন্য বাইডেনকে দোষারোপ করা শুরু করে দিয়েছেন। একজন রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য সামাজিক মাধ্যম এঙে করা এক পোস্টে ‘একটি হত্যাকাণ্ডের প্ররোচনা’ দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অভিযুক্ত করেছেন।

ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন, এমন সম্ভাব্যদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় যার নাম থাকবে বলে ভাবা হচ্ছে সেই সিনেটর জেডি ভ্যান্স বলেছেন, বাইডেনের প্রচারণার বক্তব্য সরাসরি এই ঘটনার দিকে নিয়ে গেছে।

অন্য রিপাবলিকান রাজনীতিকরাও প্রায় একই ধরনের কথা বলেছেন। আর তাদের বিরোধীরা তাদের এসব কথার নিন্দা জানাবে তা একরকম নিশ্চিত। এ রকম উত্তেজনাকর সময়ে পাল্টাপাল্টি এসব কথাবার্তায় পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাকর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে। বিবিসি বলছে, ইতোমধ্যে পাল্টাপাল্টি কথার লড়াই শুরু হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, যা মর্মান্তিক এক ঘটনা নিয়ে অত্যন্ত কুৎসিত লড়াইয়ের রূপ নিতে পারে। আর সে রকম কিছু হলে যুক্তরাষ্ট্রের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা নতুনরূপে হাজির হতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅপমান সইতে না পেরে বিষপানে কৃষকের আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধকোটা নিয়ে হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ