প্রিমিয়ার ভার্সিটির সমাবর্তন : স্মৃতির ডায়েরিতে লেখা একটি দিন

নাজনীন আমান | শনিবার , ৫ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ

গত ৩০শে অক্টোবর নেভি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল চট্টগ্রামের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন। সকল ছাত্র ছাত্রী সেজেছিল কালো গাউন, হলুদ বা নীল স্যাশে ও কালো টুপিতে। ঘড়ির কাঁটা দশটা ছুঁতেই প্রত্যেক বিভাগের সকল ছাত্র-ছাত্রী সারিবদ্ধভাবে হলে প্রবেশ করেন। এরপরে প্রবেশ করেন সকল বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। এরপর মার্শালের নেতৃত্বে হলে প্রবেশ করেন সকল বিভাগের ডীন, উপাচার্য ও অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ। মার্শালের দায়িত্বে ছিলেন ড. অধ্যাপক মোহিত উল আলম। অনুষ্ঠানে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি মাননীয় চ্যান্সেলরের মনোনীত প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি। অনুষ্ঠানে আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে করে তোলেন আরও প্রাণোচ্ছল আভিজাত্যপূর্ণ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন। এবারের সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক প্রফেসর ড. পবিত্র সরকার। যাঁর বক্তব্যে উঠে আসে প্রকৃতি ও তার কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণের কথা। শিক্ষা গ্রহণের পর সেই শিক্ষার আলো সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। একজন যোগ্য শিক্ষকই পারেন দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে। শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যকার মধুর সম্পর্ক তৈরির দায়িত্ব সমাজ ও প্রতিষ্ঠানের। তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু। সেদিন যে সকল ছাত্র ছাত্রী সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলাম তাঁরা সত্যিই অনেক ভাগ্যবান ও কৃতজ্ঞ এই জ্ঞানপুরুষের সান্নিধ্যে পেয়ে। যাঁর বক্তব্য শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের অনুপ্রেরণা ও সাহস জোগাবে। পথ চলাকে করবে মসৃণ ও উজ্জ্বল।
সমাবর্তন প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য এক স্বপ্ন। দীর্ঘ কয়েক বছর পরিশ্রম করে অধ্যয়ন করার পর যে কোন ছাত্র ছাত্রীই চায় তার কাজের একটি স্বীকৃতি। আর তা পাওয়া যায় সমাবর্তনে। অনেক আকাঙ্ক্ষার, আবেগের ও উচ্ছ্বাসের অনুষ্ঠান এই সমাবর্তন। এই উপলক্ষে চট্টগ্রামে বেশ কয়েকদিন ধরে ছিল সাজ সাজ রব। সেদিন তারা মেতে উঠেছিল সৃষ্টি সুখের উল্লাসে। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাপ উড়িয়ে জানান দেয় তারাই নেতৃত্ব দিবে আগামীতে। তারাই হবে দেশের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারী।
বহুদিন পর বন্ধু, শিক্ষকদের সাথে দেখা হতে পেরে কেউ কেউ আবেগে আপ্লূত হয়ে পড়েছিল। প্রাক্তন ও বর্তমানের এক মোহনীয় মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল এই তৃতীয় সমাবর্তন। বর্তমান ছাত্র ছাত্রীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় পুরো দিনের এক জমকালো আয়োজন। যেখানে উঠে আসে পুরো চট্টগ্রামের ইতিহাস, কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, আতিথেয়তা, পাহাড়ি জীবন যাত্রা। চট্টগ্রাম মানে বাংলাদেশের বুকে এক বিশালতা। যেখানে সাগর ও পাহাড় মিলেমিশে একাকার।
অনুষ্ঠানের শেষে স্মরণ করা হয় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে। যাঁর অতুলনীয় অবদান রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য। তিনি চট্টলবীর। পরিশেষে বলি আজকের এই দিন প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জীবনকে করবে মহিমান্বিত ও মূল্যবান। স্মৃতির ডায়েরিতে সোনালী অক্ষরে লিখা থাকবে সেই দিনের কয়েক ঘণ্টা, কয়েক মুহূর্ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআরাধ্য সূর্যাস্তের আগে
পরবর্তী নিবন্ধআল-কোরআন মানুষের কাছে গচ্ছিত আল্লাহর মহা আমানত