ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করলে তা খেলাপিতে পরিণত হয়। দায়ের করা হয় অর্থঋণ মামলা। বর্তমানে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে এ সংক্রান্ত মামলা রয়েছে ৪ হাজার ৮০০। এর মধ্যে অর্থঋণ মামলার সংখ্যা ১ হাজার ৮০০। বাকিগুলো জারি মামলা ও মিস মামলা।
অর্থঋণ আদালত সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে এ আদালতে অর্থঋণ মামলা দায়ের হয়েছে ৭শর কিছু বেশি। অথচ এর আগের বছরগুলোতে গড়ে প্রায় ১২০০ থেকে ১৩০০ মামলা দায়ের হয়েছে। বাদী ব্যাংকগুলোকে জবাবদিহিতার মধ্যে রাখার কারণে বর্তমানে মামলা দায়েরের সংখ্যা কমেছে। সেটি প্রায় অর্ধেক।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম আজাদীকে বলেন, ঋণ খেলাপিদের কাছ থেকে ঋণ আদায়ে খুবই সিরিয়াস বর্তমান বিচারক। তিনি বাদী ব্যাংকগুলোকে জবাবদিহিতার মধ্যে রেখেছেন। ব্যাংক নিজেদের প্রচেষ্টায় ঋণ আদায় করছে। খেলাপিরাও নিজ থেকে ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসছেন। ঋণ আদায়ে একেবারে যেসব প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হচ্ছে, শুধু তারাই ঋণ আদায়ের জন্য অর্থঋণ মামলা দায়ের করছে। রেজাউল করিম বলেন, ব্যাংকগুলো অযথা, অপ্রয়োনীয় মামলা দায়ের করার কারণে ইতিপূর্বে নানা সময় শোকজ করা হয়। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এতে সচেতনতা এবং দায়বদ্ধতা বেড়েছে। ঋণ খেলাপিরা আদালতের তৎপরতার কারণে ঋণ পরিশোধ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আদালতের তৎপরতার কারণে মামলা দায়েরের সংখ্যা কমছে এবং সেটি শুধু চট্টগ্রামেই। দেশের অন্যান্য জেলায় সেটি হচ্ছে না। অন্যান্য জেলায় মামলা দায়েরের সংখ্যা আগের মতই রয়েছে। কোনো কোনো অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়েরের সংখ্যা বেড়েছে বলেও জানান বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।
আদালত সূত্র জানায়, ঋণ আদায়ে আদালতের পক্ষ থেকে বন্ধকী সম্পত্তিতে রিসিভার নিয়োগ, জামানত বিহীন ঋণ খেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, দেওয়ানী আটকাদেশ, ব্যাংক কর্মকর্তাদের শোকজসহ নানা প্রচেষ্টার কারণে খেলাপিরা ঋণ পরিশোধে বাধ্য হচ্ছেন। হচ্ছে বিপুল সংখ্যক মামলার নিষ্পত্তি। ২০২১ সালের জানুয়ারির একটি হিসেবে দেখা যায়, ২২ মাসে ২২শ মামলা নিষ্পত্তি করে খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছে। আদালতের এসব প্রচেষ্টার কারণে ব্যাংকগুলো অনেকটাই জবাবদিহিতার আওতায় এসেছে। খেলাপিরা বুঝে গেছেন, ঋণ পরিশোধ করতেই হবে। অন্যথায় ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান মামলা দায়ের করবে। আর মামলা দায়ের করলে রেহাই নেই।