সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক সংখ্যা এবং দূরত্ব বিবেচনায় ডাবল শিফটের পরিবর্তে এক শিফট চালুর নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো একীভূত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গতকাল (৪ জানুয়ারি) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে এই নির্দেশনা পাঠিয়েছে। এ লক্ষ্যে সিঙ্গেল শিফটে শিখন-শেখানো কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান গতবছর জানিয়েছিলেন, ছাত্র ও শিক্ষক সংখ্যায় ভারসম্যহীনতা, দূরত্ব, সিফট ইত্যাদি বিবেচনায় কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একীভূত করা হবে। তার যুক্তি ছিল, ছাত্র কম শিক্ষক বেশি, শিক্ষক কম ছাত্র বেশি- এরকম ভারসম্যহীনতা কোথাও কোথাও আছে। নিকটবর্তী স্কুলে যদি একীভূত করা হয় তাহলে ছাত্রদের শিখন ঘণ্টাও বেশি হবে। খবর বাংলানিউজের।
মন্ত্রণালয় জানায়, যেখানে দুই সিফট সেখানে শিখন ঘণ্টা কম। যেখানে শিক্ষার্থী বেশি সেখানে শিফট চালু করতে হয়েছে, সেই স্কুলগুলোর শিফট একীভূত করে দেওয়া হয়েছে। এখন সেই স্কুলগুলোতে সিফট নেই। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, যেসব বিদ্যালয়ে বর্তমানে পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্যবহারযোগ্য শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক রয়েছে, সে সব বিদ্যালয়ে অবিলম্বে সিঙ্গেল শিফটে পাঠদান পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেসব বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ বা শিক্ষক নেই বা উভয়ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়েছে, এমন কাছাকাছি অবস্থিত (সর্বোচ্চ ১ কিলোমিটার দূরত্বের) দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে পাঠদানের ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত কার্যক্রম চালু করতে হবে। এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য দূরত্বের বিদ্যালয়সমূহের শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সংখ্যা এবং বিদ্যালয়ের ব্যবহারযোগ্য শ্রেণিকক্ষের তথ্য বিশ্লেষণ করে পাশাপাশি দুইটি বিদ্যালয়ে দুইভাগ করে সিঙ্গেল শিফটে পাঠদান পরিচালনা করতে হবে।
দুটি বিদ্যালয়ের মাঝে শ্রেণি বিভাজনের ক্ষেত্রে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত একটি বিদ্যালয়ে এবং অন্যটিতে তৃতীয় শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন জনবলের মাধ্যমে সরেজমিনে পরিদর্শন করে সিঙ্গেল শিফট চালুর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদের নির্দেশনায় বলা হয়, তার জেলায় যেসব বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক ব্যবহারযোগ্য শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক রয়েছে, সে সব বিদ্যালয়ে অবিলম্বে সিঙ্গেল শিফটে পাঠদান পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তার জেলায় যেসব বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ বা শিক্ষক নেই বা উভয়ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়েছে, এরূপ কাছাকাছি অবস্থিত (সর্বোচ্চ ১ কিলোমিটার দূরত্বের) দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গ্রহণযোগ্য দূরত্বের বিদ্যালয়সমূহের শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সংখ্যা এবং বিদ্যালয়ের ব্যবহারযোগ্য শ্রেণিকক্ষের তথ্য বিশ্লেষণ করে পাশাপাশি দুটি বিদ্যালয়ে দুইভাগ করে সিঙ্গেল শিফটে পাঠদান চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করে বিস্তারিত তথ্যসহ (গাণিতিক ও বাস্তবতা) প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।
এক্ষেত্রে, কাছাকাছি অবস্থিত কর্মরত দুইটি বিদ্যালয়ের নাম, শিক্ষক সংখ্যা, শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা, ছাত্র (শিক্ষক কক্ষ ব্যতীত)-ছাত্রীর সংখ্যা, ভৌগলিক অবস্থান (প্রতিবন্ধকতা আছে কিনা), দুটি বিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী দূরত্বের তথ্য ছক আকারে পাঠাতে হবে। আগামী ২২ জানুয়ারির মধ্যে ই-মেইলে তথ্য পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।