প্রাণ ফিরল কুতুবদিয়া শিল্পকলায়

| বৃহস্পতিবার , ৩১ আগস্ট, ২০২৩ at ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ

প্রায় চার বছর বন্ধ থাকার পর সংস্কৃতি চর্চা ফিরতে শুরু করেছে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। প্রতিষ্ঠানটি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে আনসার সদস্যদের বাসস্থান; ফলে শুরু হয়েছে একাডেমির প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। খবর বিডিনিউজের। একাডেমির কোষাধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেছেন, জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সংগীত ক্লাস চালু হলেও এখনও নানা সমস্যায় জর্জরিত দ্বীপ উপজেলার সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম এই প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে সংগীত বিভাগে ক্লাস করছেন ২৫ জন। গত কয়েক বছরের অযত্নঅবহেলায় একাডেমির আধাপাকা ভবনের সাইনবোর্ডের অর্ধেকটা ঢাকা পড়েছে শ্যাওলায়। এখন ভবন সংস্কার ও দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রগুলোর মেরামত প্রয়োজন। শিল্পকলা একাডেমির কোষাধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলে শিল্পকলা চালু করা হয়। কিন্তু শিল্পকলার হারমোনিয়াম, তবলাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নষ্ট হয়ে গেছে। ঘরেরও সংস্কার করতে হবে। সাইনবোর্ডও ঠিক করতে হবে। এর জন্য বরাদ্দ দরকার। আমাদের ফান্ডে টাকা নেই। সেটা জেলা কালচারাল অফিসারকে জানিয়েছি।

কুতুবদিয়া শিল্পকলা একাডেমির স্থবিরতা শুরু ২০২০ সালে কোভিড মহামারীর সময় থেকে। মহামারী শুরু থেকে এর পরের বছর পর্যন্ত সব কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিল শিল্পকলা একাডেমি। এরপর মহামারীর দাপট কমলেও একাডেমির পাশেই আনসারদের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। আর একাডেমির মহড়া কক্ষে আনসারদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। ফলে একাডেমির কার্যক্রম আর চালু করা সম্ভব হয়নি। গেল বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ‘শিল্পকলায় থাকছেন আনসাররা!’ শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছিল বিডিনিউজ। বিষয়টি জানতে পেরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী কতুবদিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যার সঙ্গে কথা বলে আনসার সদস্যদের অন্যত্র স্থানান্তর করে শিল্পকলার কার্যক্রম গতিশীল করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ওই আলোচনাসমালোচনারও আট মাস পর আনসার সদস্যদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে ক্লাস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় রং চটে যাওয়া শ্যাওলায় ঢাকা সাইনবোর্ডের মতোই শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে। সংগীত বিভাগের ক্লাস চালু হলেও আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কনসহ অন্যান্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম এখনও চালু হয়নি। কোনো কারণ না জানিয়ে আগের গানের শিক্ষককে বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে একাডেমির বিরুদ্ধে। স্থানীয় একটি হাই স্কুলের শিক্ষক সমীর কান্তি শীল উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গানের শিক্ষক হিসেবে আছেন। পাশাপাশি তিনি সাধারণ সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সমীর কান্তি শীল বলেন, নতুন করে চালুর ব্যাপারে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। আমারই ছাত্র পার্থ দাশ এখন গানের প্রশিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিচ্ছেন। সাধারণ সম্পাদক পদেও আছেন কিনা সেটিও এই শিক্ষকের জানা নেই। তিনি বলেন, শিল্পকলা চালু হয়েছে, এতেই আমি খুশি। কিন্তু কবে চালু হয়েছে, আমি এর কিছুই জানি না। যেদিন চালু হয়, আমাকে কিছুই বলা হয়নি। আমি আর যাইনি।

শিল্পকলা চালুতে বিলম্বের জন্য সমীর কান্তি শীলের ওপরে দোষ চাপিয়েছেন একাডেমির কোষাধ্যক্ষ নুরুল আমিন। তিনি বলেন, সমীর কান্তি শীলের কারণেই করোনার পরও শিল্পকলা চালু হতে দেরি হয়েছে। তিনি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেননি। আমি কয়েকবার ইউএনও স্যারের সাথে দেখা করে বলেছি, স্যার আপনি অনুমতি দিলে আমি শিল্পকলা চালু করি। পরে ইউএনও স্যারকে নিয়ে আমরা চালু করেছি। সমীর কান্তি শীলের প্রসঙ্গে কুতুবদিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, উনি যদি ক্লাস নিতে চান, তবে তো ক্লাস নিতে পারবেন। উনাকে বাদ দেওয়া হয়নি। আরেকজন শিক্ষক নেওয়া হয়েছে। উনিও আছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজেমসকে বাউল বানিয়েই ছাড়ল এআই
পরবর্তী নিবন্ধপঞ্চম বর্ষের মহোৎসব কাল