প্রস্তাবিত বাজেট বিতর্কমুক্ত থাকুক

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ১৮ জুন, ২০২২ at ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ

এটি সর্বজনবিদিত যে, প্রতিটি জাতিরাষ্ট্রে অর্থবছরের প্রারম্ভেই পরবর্তী বছরের অর্থব্যবস্থাপনা সুচারুরূপে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব-আলোচনা-অনুমোদন একটি সাংবিধানিক চিরায়ত বিধান। সরকার পরিচালনায় প্রতিটি খাতকে বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দের হ্রাস-বৃদ্ধি অত্যধিক তাৎপর্য বহন করে। দেশের সামগ্রিক কাঠামোগত উন্নয়ন এবং মূল্যস্ফীতিসহ জনদুর্ভোগ লাঘবে নানামুখী বাজার নিয়ন্ত্রণ-আমদানি-রপ্তানি-রাজস্ব আয় ইত্যাদি প্রাক্কলিত হয়ে থাকে। কর-ভ্যাট-সরকারের সকল আয়ের উৎসের উপর ভিত্তি করে মূল ব্যয় পরিকল্পনা গৃহীত হলেও দাতা-উন্নয়ন সহযোগী-দেশীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদান-ঋণ গ্রহণে একটি প্রায়োগিক কর্মকৌশল বাজেটের সূক্ষ্ণ বিশ্লেষণে প্রতিফলিত হয়। মূলত দেশবাসীর জীবনমান উন্নয়ন-শিল্পায়ন-কর্মসংস্থানসহ উদ্ভূত পরিস্থিতির আশু সমাধানের নির্দেশিত পন্থা অবলম্বনে বাজেটের সফলতা-সার্থকতা-গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে। দেশে প্রচলিত ধারা হচ্ছে সরকার কর্তৃক প্রস্তাবিত বাজেটকে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে সময়োপযোগী-জনবান্ধব বাজেট হিসেবে স্বাগত জানানো। অন্যদিকে বিরোধী দল বা ব্যক্তির পক্ষ থেকে নিছক বিরোধিতার জন্য বাজেটকে প্রশ্নবিদ্ধ-বিতর্কিত করে প্রত্যাখানের উদাহরণ সচেতন জনতা-বিজ্ঞজনের কাছে গতানুগতিক হাস্যরসে পরিণত। বস্তু-সত্যনিষ্ঠ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বাজেট পর্যালোচনা প্রত্যেক নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব হলেও দেশে এই ধরনের ইতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতির দৃষ্টান্ত এখনও পরিলক্ষিত নয়। ধারাবাহিকতায় প্রস্তাবিত বাজেটের উপর আলোচনা-সমালোচনার প্রেক্ষাপটে নিবন্ধে কিছু বিষয় উপস্থাপন করা হলো।

স্বাধীন বাংলাদেশে এত বিশাল আকারের বাজেট প্রস্তাব এটিই সর্বপ্রথম। ইতিমধ্যেই আমরা সম্যক অবগত হয়েছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাকালের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ বিশ্বপরিমন্ডলে অদম্য উন্নয়ন অগ্রগতির মডেল হিসেবে মর্যাদাসীন। নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বহু মেগাপ্রকল্প-ভৌত অবকাঠামো-যোগাযোগ ব্যবস্থার দৃশ্যমান আমূল পরিবর্তন দেশের ভাবমূর্তিকে উচুঁমাত্রিকতায় পৌঁছিয়ে দিয়েছে। স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল বিশ্বের মহাসড়কে পদার্পণ পিছনের সকল অশুভ অন্ধকারের অপশক্তির চক্রান্ত-ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে অবিচল আস্থায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার সংকল্প যথার্থ অর্থেই বাজেটে উদ্ভাসিত। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কৃষিখাত, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ, কর্মসংস্থান ও শিক্ষাসহ বেশকিছু খাতকে গুরুত্ব দিয়ে প্রণীত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। দেশের ৫১তম ও ক্ষমতাসীন দলের ২৩তম বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত এই বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। তন্মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংগৃহীত কর থেকে ৩ লাখ ৭০ হাজার, এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে ১৮ হাজার এবং কর ব্যতীত আয় ৪৫ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলিত হয়েছে। মোট ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ঘাটতি বাজেটে অনুদানসহ বৈদেশিক উৎস থেকে ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেটে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় ছিল যথাক্রমে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩৫৭ কোটি ও ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। এনবিআর সূত্র থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি, এনবিআর বহির্ভূত ১৬ হাজার কোটি এবং কর ছাড়া ৪৩ হাজার কোটিসহ মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক উৎস থেকে ১ লাখ ১ হাজার ২২৮ কোটি ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি আহরণ করার প্রস্তাব ছিল। তুলনামুলক চিত্রে ২০২১-২২ অর্খবছরের বাজেটের চেয়ে নতুন বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ ও এটি যথাযথ মোকাবিলার আনুষঙ্গিক চ্যালেঞ্জসমূহ।

পেশকৃত বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। যার পরিমাণ ১ লাখ ৯০ হাজার ৭১৩ কোটি। ৪১ হাজার ৭০৭ কোটি এবং ৪০ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩১ হাজার ৭৫৯ কোটি, কৃষি মন্ত্রণালয় ২৪ হাজার ২২৪ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৮ হাজার ৮৫২ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১৬ হাজার ৬১৪ কোটি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ২২৯ কোটি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ১০ হাজার ১৯৬ কোটি, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ৭ হাজার ২২৪ কোটি, বেসামরিক বিমান পরিবহর ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৭ হাজার ৪ কোটি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ৯৮৪ কোটি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ৮২১ কোটি, খাদ্য মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ২১৩ কোটি, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ৭৪ কোটি, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৩ হাজার ৮০৮ কোটি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৪৮৭ কোটি, ভূমি মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৩৮১ কোটি, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৩৫৩ কোটি, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ৬২৮ কোটি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৬৫১ কোটি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৬৩৭ কোটি, শিল্প মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৫২১ কোটি, পরিবেশ-বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৫০১ কোটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৩৩৮ কোটি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ১ হাজার ২৭৫ কোটি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৯৯ কোটি এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ৯৯০ কোটি।

প্রস্তাবিত বাজেটের সার্বিক পর্যালোচনায় দেখা যায় আসন্ন অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষা খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ৯ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরও বরাদ্দ বেড়েছে ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জন্য ৩১ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা মোট উন্নয়ন বরাদ্দের ১২ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৪২ কোটি টাকা। বিশ্বজুড়ে সারের অব্যাহত মূল্য বৃদ্ধি বিবেচনায় সার বাবদ ভর্তুকি ৪ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে নতুন বাজেটে ১৬ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এটি যথোপযুক্ত পদক্ষেপ হিসেবে সমাদৃত। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে বরাদ্দ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে খাদ্যনিরাপত্তা-সামাজিক কল্যাণ-মানবসম্পদ উন্নয়ন-কর্মসৃজন-অবসর ও পারিবারিক ভাতা এবং অন্যান্য খাতে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা ৭৫০ থেকে ১০০ টাকা যোগ করে ৮৫০ টাকা নির্ধারণের পাশাপাশি উপকারভোগীর সংখ্যা আরো সাড়ে তিন লাখ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। উক্ত প্রস্তাব দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে – নিঃসন্দেহে তা বলা যায়।

বর্তমান বিশ্বের চলমান প্রেক্ষাপট ও মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় বাজেটে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রম। সম্মানিত অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ‘চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে অসংগতি রোধের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বদ্ধপরিকর। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বহিঃস্থ এবং কিছু অভ্যন্তরীণ কারণে সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।’ ১৩ জুন ২০২২ বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়া নেটওয়ার্ক অন ইকোনোমিক মডেলিং (সানেম) এর নির্বাহী পরিচালক বাজেটকে বৃহৎ ব্যবসা বান্ধব বলে মন্তব্য করেছেন।
বাজেট প্রস্তাবে পাচার হওয়া অর্থ বা সম্পদ বিনা প্রশ্নে দেশে আনার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রতিভাত। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এটিকে অনৈতিক, বৈষম্যমূলক ও বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছে। সংস্থাটির মতে, নামমাত্র ৭ শতাংশ কর দিয়ে পাচার করা টাকা প্রশ্নহীনভাবে দেশে আনার সুযোগের মানে স্পষ্টতই পাচারকারীদের অনৈতিক সুরক্ষা ও পুরস্কার প্রদান।

গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইনটেগ্রিটি’র ভাষ্য মতে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৬৪ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে পাচার হয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে শুধু ২০১৫ সালে পাচার হয়ে যায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। পাচারকৃত টাকার পরিমাণ বিবেচনায় বাংলাদেশ পাচারকারী দেশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের সাড়ে ১৭ শতাংশই কোনো না কোনভাবে পাচার হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ পাচার মনিটরিং সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিআইএফইউ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, আমদানি-রপ্তানিসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কারসাজি আর হুন্ডির আড়ালে অর্থপাচার করছে অর্থপাচারকারী সিন্ডিকেট। পাচার হওয়া এসব অর্থ চলে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ ১০টি দেশে। বিদেশে টাকা পাচার রোধ, পাচারকৃত অর্থ ফেরত ও পাচারকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য রাষ্ট্রের ৮টি সংস্থা একযোগে কাজ করার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না অর্থ পাচার কিংবা ফেরত আনা সম্ভব হচ্ছেনা পাচার হওয়া অর্থ।

প্রাসঙ্গিকতায় দেশব্যাপী উল্লেখিত বিষয়ে নানামুখী বিরোধী বক্তব্যে বিভ্রান্তির অপচেষ্টা দ্রুততার সাথে প্রচার ও প্রসার লাভ করছে। এতদিন ধরে দুদকসহ অন্যান্য সংস্থার গৃহীত সকল পদক্ষেপ এতে প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। দেশপ্রেমিক বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চেতনায় বিশ্বাসী জনগণের মধ্যে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়াও জোরালোভাবে সঞ্চারিত হচ্ছে। জনশ্রুতিমতে সরকার ও দলকে বেকায়দায় ফেলে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরিতে কোন প্রকার ইস্যুবিহীন বিরোধিতাকারীদের অনর্থক বিরোধিতা-অরাজকতা সৃষ্টিতে অন্ধকারের অশুভ-অপরাজিত শক্তির সিন্ডিকেটেড কোন অপশক্তি এর পক্ষে সক্রিয় কিনা তার নিবিড় পর্যবেক্ষণ-বিশ্লেষণ প্রয়োজন। অর্থ পাচারের সকল কূটপন্থা রুদ্ধ করে এবং ইতিমধ্যে পাচারকৃত সব অর্থ দেশে ফেরত আনা বা কোন প্রকার ছাড় না দিয়ে এদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ সরকার ও দলের ভাবমূর্তিকে অবশ্যই সুদৃঢ় করবে। বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদনের পূর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ সচেতন দেশবাসীর হৃদয়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। অসাধারণ-যৌক্তিক-বিবেচ্য বিষয়সমূহ আমলে নিয়ে বাজেট প্রস্তাবের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহল্যান্ড থেকে
পরবর্তী নিবন্ধ৬ মাসের শিশুদের করোনার টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র