সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক ঘোষণায় বলেন, যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তি যদি সে দেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া ব্যাহত করার জন্য দায়ী হন বা এরকম চেষ্টা করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়–তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারবে। এর আওতায় পড়বেন বর্তমান এবং সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যবৃন্দ, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিচারবিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সদস্যরা। আপনি সরকারি দলে নেই বলে আপনি বিরোধীদল হিসেবে যেমন পার পাবেন না, তেমনি আপনি সরকারি দলে থেকে বিরোধীদের অন্যভাবে দমন করে আবার বিরোধীদের উপর দোষ চাপাতে যাবেনতো শেষ। একটা কথা মনে রাখা দরকার ইউএস ব্যান মানে হল আপনার জন্য এবং আপনার পরিবারের জন্য অন্য সকল দেশেই ব্যান থাকবেন। আপনি ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা হন বা কেন্দ্রীয় বড় নেতা হন সকলে এর আওতায় পরবেন। বৈদেশিক কারো সাথে সম্পর্ক খারাপ করলে আলটিমেটলি গনতন্ত্রের জন্যই ক্ষতি। অতি উৎসাহী আমলা, বেশ কবছর ধরে কয়েকজন মন্ত্রীর লাগামহীন অপেশাদার আচার আচরণ, ক্ষমতাশীন দের অতিমাত্রায় দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া এবং বিরোধী দলগুলোর বেশ কয়েকজন নেতার জন্য আজকে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে বারবার অপমানিত হতে হচ্ছে।
গার্মেন্টস রপ্তানি, রেমিটেন্স, বৈদেশিক বিনিয়োগ দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ তিনটি খাতের জন্য আপনাদের কি একবারও মন কাঁদে না? এসব খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কোটি মানুষের কথা ভাবেন না? কী করে ভাববেন টাকাতো সব পাচার! এখন পাচার করা টাকা পারবেন না হজম করতে না পারবেন বমি করতে! এটাই ইউএস ব্যান! সরকারি দল বলেন আর বিরোধী দল বলেন আপনারা আমলা নির্ভর না হয়ে তৃনমূলের কথা সামান্যতমও যদি কানে নিতেন তাহলে দেশের এ সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হতো না। তবে আমার বিশ্লেষণে আমি ছোট জ্ঞানে যেটা বলতে পারি তা হচ্ছে ইউএস ভিসা ব্যান এটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশেরই লাভ। কেন? ধরুন যারা দুর্নীতিবাজ তারা তাদের টাকা যেভাবেই হোক বিদেশে পাচার করে। পাচারকারী এটা যে কেউ হতে পারে। সরকারি দল বা বিরোধীদল, বাংলাদেশের বর্তমান বা সাবেক কর্মকর্তা/কর্মচারী, বিচার বিভাগের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা যে কেউ। তাদের ছেলে মেয়ে পড়ালেখা করছে সেসব দেশে। তাদের আর চিন্তা কী। বসবাস করতে হবে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষজনকে। মাত্র পাঁচ হাজার টাকা লোন পরিশোধ করতে না পেরে গ্রামের কৃষক আত্মহননের পথ বেছে নেয়। খাবার খেতে না পেরে মা তার সন্তানকে বিক্রি করে দিতে চায়। দেশটাতো এরকম হওয়ার কথা ছিল না। যারাই ক্ষমতাশীন ছিল তাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে দুর্নীতিবাজরা দিনদিন সাহস দেখিয়ে গেছে। কারো উপর ইউএস ভিসা ব্যান এর মানে হল ইউএসএ’র বন্ধুপ্রতিম যতগুলো দেশ আছে কেউ তাদের এবং তাদের পরিবারকে সেসব দেশে ঢুকার অনুমতি দিবে না। তাই বাধ্য হয়ে দেশেই থাকতে হবে। পালানোর সুযোগ নেই।