প্রবীণ রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরীর ইন্তেকাল

বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আজ দাফন

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৪ at ৪:২২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহেরাজেউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু হয় বলে তার সাবেক একান্ত সচিব মো. শাহজালাল জানান। গতকাল বুধবার সকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বেগম মতিয়া চৌধুরীকে দাফন করা হবে মীরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। আজ বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে বলে তার ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন।

ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নতুন জায়গা চাওয়া হয়েছে। জায়গা পেলে সেখানে দাফন করা হবে, না পেলে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার স্বামী বজলুর রহমানের কবরে দাফন হবে।

শেরপুর২ আসনের ছয়বারের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী ১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তাকে সংসদ উপনেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুরে মতিয়া চৌধুরীর জন্ম। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৬৪ সালে সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে মতিয়ার বিয়ে হয়। ইডেন কলেজে পড়ার সময় বাম ধারার ছাত্র রাজনীতিতে জড়ান মতিয়া চৌধুরী। ১৯৬১৬২ মেয়াদে তিনি ছিলেন ইডেন কলেজ ছাত্রী সংসদের ভিপি। ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফার আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা ছিল মতিয়া চৌধুরীর। আন্দোলনসংগ্রামে অগ্নিঝরা বক্তৃতার জন্য তাকে বলা হত ‘অগ্নিকন্যা’। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিতে যোগ দেন মতিয়া। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ন্যাপকমিউনিস্ট পার্টিছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠনে তিনি একজন সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭৯ সালে ন্যাপ ছেড়ে মতিয়া যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ১৯৮৬ সালে দলের কৃষিবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এক সময় তাকে দলের নীতি নির্ধারণী পর্ষদে অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া হয়। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বহুবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে মতিয়া চৌধুরীকে। জেলজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে ‘দেয়াল দিয়ে ঘেরা’ নামে একটি বই লিখেছেন তিনি। রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছে সারাজীবনই সাধারণ বেশভূষা আর সাদামাটা জীবনযাপনের জন্য পরিচিত ছিলেন মতিয়া চৌধুরী। সর্বশেষ তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভূমিকার জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনৌ রুটে পণ্য পরিবহনে নতুন প্লাটফর্ম বিডব্লিউটিসিসি
পরবর্তী নিবন্ধনবম ও দশম শ্রেণীতে ফের বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা চালু হচ্ছে