প্রবারণা পূর্ণিমার তাৎপর্য

শরণংকর বড়ুয়া | বুধবার , ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে জানাই শুভ প্রবারণা পূর্ণিমার ফুলেল শুভেচ্ছা। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পযর্ন্ত বুদ্ধ প্রবর্তিত ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস পালন বৌদ্ধ সমপ্রদায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্রত। এই সময় ভিক্ষুসংঘ তথা বুদ্ধের অনুসারী দায়ক দায়িকাবৃন্দ দানশীল ভাবনা ও প্রজ্ঞার অনুশীলনের মাধ্যমে ভূলভ্রান্তি স্বীকার করে আদর্শ জীবন গঠনের সম্যক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে কুশলকে বরণ ও অকুশলকে বর্জন করা। সত্য সুন্দরকে লালন করে গঠনমূলক পবিত্র কর্মের পথে এগিয়ে যাওয়া সুদৃঢ় সংকল্প। এমন দিনে মনে জাগে বিশুদ্ধ আত্মচেতনা সামাজিক সৌহার্দ্য, সমপ্রীতি ও মৈত্রীর বার্তা বরণ। এই শুভ দিনে বুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখা মানসে বৌদ্ধদের উৎসবের অন্যতম সন্ধ্যাকালীন বিশেষ আর্কষণ আকাশ প্রদীপ অর্থাৎ রংবেরং এর ফানুস উত্তোলন।

রাজকুমার সিদ্ধার্থ গৃহত্যাগ করে মল্লারাজ্যের সীমান্তে আনোমা নদীর তীরে পৌঁছলেন। তখন সিদ্ধার্থ নিজের মাথার চুল সঙ্গে থাকা তলোয়ার দিয়ে কেটে আকাশ মার্গে একগুচ্ছ চুল উড়িয়ে দেন। সেই কেশরাশি স্বর্গের দেবরাজ ইন্দ্র নিয়ে স্বর্গে চুলামনি জাদি নির্মাণ করেন। সেই স্মৃতিকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা করে আকাশে ফানুন উড়িয়ে তথাগত বুদ্ধের চুলধাতুকে বৌদ্ধরা পূজা করে থাকেন। ফানুস উড়ানো দেখার জন্য জাতি ধর্ম নির্বিশেষে হাজার হাজার মানুষ আনন্দ উপভোগ করেন। এই ফানুস উদযাপন এখন সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। বৌদ্ধ ধর্মে জাতি ধর্ম কোনো পার্থক্য নেই। সকল মানুষই সমান এক ও অভিন্ন। বুদ্ধ ধর্ম শান্তির ধর্ম। বুদ্ধ বলেছেন অহিংসা পরম ধর্ম। কর্মের মাধ্যমেই মানুষ শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করে থাকেন। আজ এই শুভ দিনে প্রবারণার আলোকে প্রতিজ্ঞা করবো আত্মশুদ্ধির জন্য সব সময় সচেষ্ট থাকবো। নিজেকে সৎ রাখবো। এই হোক শুভ প্রবারণা পূর্ণিমায় সকলের অঙ্গীকার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসময়ের সঠিক প্রয়োগ
পরবর্তী নিবন্ধশিহাবের রেজাল্ট পেয়ে দোয়া চাইলেন স্বজন-সহপাঠীরা