প্রবল ঢেউয়ে ভেঙে যাচ্ছে মেরিন ড্রাইভ সড়ক

টেকনাফ প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৪ আগস্ট, ২০২৩ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গোপসাগরের প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে তীব্র ভাঙনের কবলে পড়েছে কক্সবাজারটেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক। ছোট বড় প্রায় ডজনাধিক স্পটে সৃষ্টি হয়েছে এ ভাঙন। শিগগিরই মেরামত করা না হলে আরো ব্যাপকভাবে ভাঙনের ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টেকনাফের বাহারছড়া, হাদুরছড়া, দক্ষিণ মুন্ডার ডেইল এলাকায় দশটি স্পটে মেরিন ড্রাইভে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। এছাড়াও টেকনাফের পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার প্রায় ৬০ মিটার সড়ক ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে। গত দুই দিনে ধরে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল থাকায় ঢেউয়ের তোড়ে ভাঙন তীব্র হচ্ছে। ঝুঁকিতে রয়েছে পর্যটন স্পট হিমছড়িসহ আরো কয়েকটি এলাকা। স্থানীয়রা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ২ থেকে ৩ দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত চলছে। এছাড়াও পূর্ণিমার তিথির ফলে কারণে সাগরের জোয়ারের উচ্চতা বেড়ে গেছে। একই সাথে উত্তাল দক্ষিণা হাওয়ার কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। ফলে বড় বড় ঢেউ মেরিন ড্রাইভ সড়কের গোড়ায় আছড়ে পড়ছে। এতে সড়ক রক্ষাকবজ জিও ব্যাগ দুর্বল হয়ে হয়ে যাচ্ছে এবং জিও ব্যাগ ডিঙিয়ে উত্তাল ঢেউ সড়কে আঘাত হানছে।

এর আগে আইন অমান্য করে মেরিন ড্রাইভ সড়কের নিকটস্থ সমুদ্র সৈকত থেকে থেকে বালু তুলে জমি ভরাট করেছে তীরবর্তী ভূমি মালিক ও ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব কারণে সাগরে সামান্য পানি বাড়লেও এ মেরিন ড্রাইভ রোডে ভাঙন দেখা দেয়। ৪ কক্সবাজার শহরের কলাতলী জিরো পয়েন্ট থেকে টেকনাফের সাবরাং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়কের দৈর্ঘ্য ৮০ কিলোমিটার। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীন হলেও এর নির্মাণ তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকৌশল কোর।

স্থানীয় জেলে আমির হোসেন বলেন, পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় সড়ক সংরক্ষণের জন্য দেওয়া জিও ব্যাগ দূর্বল হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও জিও ব্যাগের তল দিয়ে সাগরের আঁছড়ে পড়া ঢেউয়ের পানি মাটি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সড়কের পূর্ব পাশের জমিতে সাগর থেকে মাটি ভরাট করার কারণে সড়কটিকে গ্রাস করছে সমুদ্র। প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে সাগরে এই জায়গাটি একইস্থানে ভাঙন ধরে। নতুন করে আরও কয়েকটি ভাঙনের স্পষ্ট দেখা দিয়েছে।

সাবরাং ইউপি সদস্য সিদ্দিক আহমেদ বলেন, টেকসই কাজ না করা, অবৈধভাবে সাগর থেকে মাটি উত্তোলন করায় এ সড়কটিতে ভাঙতে ধরেছে। প্রভাবশালী কেউ কেউ ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে জমিজমা ভরাট করে। অতি দ্রুত সংস্কার করা না হলে সড়কটি খালে পরিণত হবে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান বলেন, সাগরের জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি হওয়ায় মেরিন ড্রাইভের কয়েকটি স্পটে ভাঙন ধরেছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টা অবগত করেছি। খুব কম সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধদালাল ছাড়া কাজ হয় না বিআরটিএ কার্যালয়ে