বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের উদ্যোগে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলা দল নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম রিজিওনাল টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। আগামী ২৮ আগস্ট শুরু হবে এই টুর্নামেন্ট। প্রথমবারের মত আয়োজিত এই টুর্নামেন্টের ১১টি দলকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে চট্টগ্রামের ছয়টি প্রতিষ্ঠান। যেখানে ফর্টিস গ্রুপ পৃষ্ঠপোষকতা করবে রাঙ্গামাটি এবং কুমিল্লা জেলা দলকে। কন্টিনেন্টাল গ্রুপ পৃষ্ঠপোষকতা করবে খাগড়াছড়ি এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে। এশিয়ান গ্রুপ পৃষ্ঠপোষকতা করবে স্বাগতিক চট্টগ্রাম এবং বান্দরবান জেলা দলকে। ইস্পাহানী গ্রুপ পৃষ্ঠপোষকতা করবে ফেনি এবং লক্ষীপুরকে। এবি ব্যাংক পৃষ্ঠপোষকতা করবে চাঁদপুর এবং নোয়াখালী জেলা দলকে। আর ক্লিফটন গ্রুপ পৃষ্ঠপোষকতা করবে কক্সবাজার জেলা দলকে। আগামী ২৮ আগস্ট সকাল ৯টায় সাগরিকাস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেনেন্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করবেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামেও হবে টুর্নামেন্টের খেলাসমূহ। ১১টি দলকে ২টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। গ্রুপ পর্বে মোট ২৫টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সেমিফাইনাল এবং ফাইনালসহ মোট ২৮টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন প্রতি ভেন্যুতে ২টি খেলা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় প্রথম খেলা এবং দুপুর ১:৩০ মি. এ দ্বিতীয় খেলা শুরু হবে। প্রতিযোগিতার মোট বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ৪৩ লক্ষ টাকা প্রদান করবে। বাকি ৩৭ লক্ষ টাকা ৬টি স্পন্সর প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে। টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দল পাবে এক লক্ষ টাকার অর্থ পুরষ্কার। রানার্স আপ দল পাবে ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিটা ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার পাবে ৫ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী জেলা দলসমূহকে অনুশীলন খরচ, আবাসন, খাবার, খেলার পোশাক, দৈনিক ভাতা, যাতায়াত ভাতাসহ যাবতীয় সুবিধাদি প্রদান করা হবে।
গতকাল বিকেলে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। যেখানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক আকরাম খান এবং মনজুর আলম মঞ্জু। মুলত এই দুজনের প্রচেষ্টায় আয়োজিত হচ্ছে এই টুর্নামেন্ট। এছাড়া টুর্নামেন্টের স্পন্সরদের মধ্যে সালমান ইস্পাহানী বলেন তারা একটি নতুন ধারার সুচনা করলেন। কে কোন দল পেয়েছে সেটা বড় কথা না। বড় কথা হচ্ছে আমরা ক্রিকেটে একটি নতুন কাজের সূচনা করতে পারলাম। তিনি বলেন চট্টগ্রামের ক্রিকেটের উন্নয়নে আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় ছিল সামনেও থাকবে। তিনি বলেন আমাদের চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার লিগে দল আছে। কিন্তু এখন আমরা খেলতে পারছিনা। আর খেলতে না পারলে ক্রিকেটার উঠে আসবে কবে। কন্টিনেন্টাল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান ইকবাল চৌধুরী আবির বলেন আমি জানিনা এখনো আমার দলে কোন কোন ক্রিকেটার খেলছে। তবে এটা একটা ভাল দিক। তিনি বলেন এই দল গুলো আমাদেরকে পাঁচ বছরের জন্য দিয়ে দিলে ক্রিকেটের উন্নতি সম্ভব। চট্টগ্রাম দলের দায়িত্ব পাওয়া এশিয়ান গ্রুপের পরিচালক ওয়াসিফ আহমেদ সালাম বলেন আমরা চট্টগ্রামের দায়িত্ব পেয়েছি। এটা আমাদেরকে আরো দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল। এখন চট্টগ্রামের প্রত্যাশা পূরণে আমাদেরকে সচেষ্ট থাকতে হবে। ক্লিপটন গ্রুপের সিইও এম ডি এম মহিউদ্দিন বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করি চট্টগ্রামের খেলাধুলার উন্নতিতে নিজেদের শামিল রাখতে আমার যে দল সেটা কিভাবে ভাল করতে পারে সে চেষ্টা করব আমরা। এবি ব্যাংকের রিজিয়নাল হেড মাহতাবুর রহমান বলেন যে যাত্রাটা হতে যাচ্ছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন আমাদের চেষ্টা করতে হবে কিভাবে এটিকে ধরে রাখা যায়। দল গুলোর স্পন্সরদের বক্তব্যে একটা কথা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে তারাও এই টুর্নামেন্ট নিয়ে বেশ আন্তরিক।
এদিকে বিসিবি পরিচালক মনজুর আলম মঞ্জু বলেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে থ্রি হান্ড্রেড এর লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। সে লক্ষ্যের পথে এই টুর্নামেন্ট একটি বড় উদ্যেগ। এই টুর্নামেন্ট ছাড়াও রিজিয়নাল ক্রিকেট নিয়ে নানা উদ্যেগ রয়েছে বিসিবি সভাপতির। এখানে ৫০ ওভারের খেলা হবে। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট হবে। কাজেই এটা একটা যাত্রা মাত্র। আমরা চেষ্টা করেছি একটা শুরু করতে। এখন মনে হচ্ছে সেটা পারছি। এদিকে বিসিবির আরেক পরিচালক আকরাম খান বলেন রিজিয়নাল ক্রিকেট কমিটি না হওয়া পর্যন্ত দেশের ক্রিকেটের প্রত্যাশিত উন্নতি হবেনা। চট্টগ্রাম এমনিতেই সবকিছুতে এগিয়ে থাকে। এবারেও যেমন আমরা এগিয়ে থাকলাম। তিনি বলেন বিসিবি সভাপতি এই টুর্নামেন্ট নিয়ে দারুন আন্তরিক। তাকে যা বলা হয়েছে সবকিছুতে তিনি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। আকরাম খান ধন্যবাদ জানান দল গুলোর স্পন্সরদের। এই স্পন্সররা চট্টগ্রামের ক্রিকেটে দীর্ঘ সময় ধরে সেবা দিয়ে আসছে। কেউ কেউ নতুন সংযোজন হয়েছে। তবে এধরনের একটি টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারাটা বেশ অর্থবহ। আকরাম খান বলেন, এই টুর্নামেন্ট ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি নতুন নতুন কিছু যোগ হবে। তিনি বলেন এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে চট্টগ্রামের ক্রিকেটে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। ১১টি দলের মধ্যে যে দলগুলো অপেক্ষাকৃত দুর্বল তাদের কিভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফিরিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে টুর্নামেন্টের টেকনিক্যাল কমিটি সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান আকরাম খান।