২০২৩ সালে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত অজেয় ছিল ভারত। কিন্তু ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ভারতের। আবারও ওয়ানডে ফরম্যাটের টুর্নামেন্টে নক–আউট পর্বে ভারতের সামনে অস্ট্রেলিয়া। এই আসরেও ভারত এখন পর্যন্ত অজেয়। আর অস্ট্রেলিয়া কোনমতে টেনেটুনে এসেছে সেমিফাইনালে। তাই ভারতের অজেয় যাত্রা থামবে নাকি বিদায় ঘন্টা বাজবে অস্ট্রেলিয়ার। তার ফায়সালা হবে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমিফাইনালে। এই টুর্নামেন্টে ২০১৩ ও ২০১৭ সালে আসরের ফাইনাল খেলেছে ভারত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা তৃতীয় ফাইনাল খেলার সেরা সুযোগ টিম ইন্ডিয়ার সামনে। অন্যদিকে ১৬ বছর পর ফাইনালে উঠার স্বপ্ন অস্ট্রেলিয়ার। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি। টুর্নামেন্টের ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে ওঠে ভারত। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচের সবগুলোতেই জয় পায় টিম ইন্ডিয়া। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে এবং নিউজিল্যান্ডকে ৪৪ রানে হারায় তারা।
অপরদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় দিয়ে আসর শুরু করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরের দুই ম্যাচে বৃষ্টির জন্য পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। ফলে ‘বি’ গ্রুপ রানার্স–আপ হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে স্টিভেন স্মিথের দল। সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে ভারতকে পেয়ে সতর্ক ২০০৯ সালে সর্বশেষ ফাইনাল খেলা অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক স্মিথের মতে, কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে দলকে। স্মিথ বলেন বিশ্ব ক্রিকেট অন্যতম সেরা এক দল ভারত। গত ৮–১০ বছর ধরে আইসিসি ইভেন্টে সেরা চারে জায়গা করে নেয় তারা। এবার গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচেই অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছে রোহিতের দল। এমন দলের বিপক্ষে সাফল্য পেতে হলে সেরা ক্রিকেট খেলা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেই। আমি আশাবাদি সতীর্থরা তাদের সেরাটা উজাড় করে দিবে এবং ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করবে। এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১৫১ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে ভারত–অস্ট্রেলিয়া। এরমধ্যে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৮৪ ম্যাচ। ভারত জিতেছে ৫৭বার। ১০ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। এছাড়া দীর্ঘ ১৬ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দেখা হচ্ছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার। ২০০৯ সালে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল।
এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান হলেও সে দেশে খেলতে যাবেনা ভারত। তাই বাধ্য হয়েই হাইব্রিড মডেলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যেখানে ভারত তাদের গ্রুপ পর্বের সবকটি ম্যাচই খেলেছে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আর সেটাকে ভারতের জন্য বাড়তি সুবিধা হিসেবে দেখছে সবাই। কারণ অন্যরা যখন এক ভেন্যু থেকে আরেক ভেন্যুতে ছুটছে তখন ভারত এক মাঠেই সারছে সবকিছু। তাই আজকের ম্যাচেও ভারত হয়তো সে সুবিধাকে কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে। তবে গ্রুপ পর্বে মাত্র একটি ম্যাচ খেলতে পারা অস্ট্রেলিয়া সে সব নিয়ে ভাবতে চায়না। তাদের লক্ষ্য মাঠে সেরাটা দেওয়া।
ভারতও মুখিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ লড়াই করতে। গ্রুপ পর্বের প্রতিটা ম্যাচেই প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতে দেয়নি ভারত। তাই সেমিফাইনালওটাও তাদের কাছে অন্য ম্যাচ গুলোর মতই। তবে লক্ষ্য যেহেতু শিরোপা জেতা, আর এই ম্যাচটা যেহেতু নক আউট, তাই এখানে পা পিছলানোর কোন সুযোগ নেই। তাই জয়ের জন্যই মাঠে নামবে দু দল সেটা একেবারে দিনের আলোর মতই পরিষ্কার।